The news is by your side.

সুদানে ক্ষমতার লড়াই: বাড়ছে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি

0 117

ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সুদানে সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে তুমুল লড়াই তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। এতে বাড়ছে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি। আগের দিন রবিবার (১৬ এপ্রিল) দুই পক্ষই মানবিক করিডোর স্থাপনে সম্মত হওয়ার পরও রাজধানী খার্তুমের বিভিন্ন জায়গায় লড়াই থামছে না বলে জানিয়েছে বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। এখন পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হাজার ছাড়িয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, নিহত ৮৩ জনের বেশি হতে পারে।

সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে প্রথমদিন দুই পক্ষই বিভিন্ন জায়গায় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করে বিবৃতিতে দেয়। কিন্তু তৃতীয় দিনের মাথায় এসে রাজধানী খার্তুমে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় জানা গেছে, লড়াইয়ে এখন সেনাবাহিনী এগিয়ে গেছে।

রবিবার আরএসএফ দাবি করেছিল, রাজধানী খার্তুম, পার্শ্ববর্তী শহর ওমদুরমান, দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলে, সুদানের উত্তরে মেরোওয়ে বিমানবন্দরের অংশগুলো দখলে নিয়েছে। পরবর্তীতে বিমানবন্দরসহ বেশ কিছু জায়গায় পুনরুদ্ধার করেছে জানিয়ে পাল্টা বিবৃতিতে দিয়েছে সেনাবাহিনী।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আরএসএফের ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালানোয় লড়াইয়ে এগিয়ে গেছে সেনাবাহিনী।

কিন্তু সোমবার ভোরে সুদানের প্রেসিডেন্টের বাসভবন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়, গ্রাউন্ড ফোর্সের সদর দফতর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জানিয়ে একে বিজয় বলে আবারও দাবি করেছে আরএসএফ।

‘আমরা ঘুমাইনি ২৪ ঘণ্টা’

রাজধানী খার্তুমে দুই বাহিনীর মধ্যে এমন লড়াইয়ে আতঙ্কে সময় পার হচ্ছে বাসিন্দাদের। তাদের একজন হুদা বলেন, আমরা খুবই ভয় পাচ্ছি। প্রচণ্ড গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দে বাড়ি কেঁপে উঠছে। ২৪ ঘণ্টা ঘুমাতে পারিনি। আমার অসুস্থ বাবার জন্য সুপেয় পানি, খাবার এবং জরুরি ওষুধ ফুরিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত।

খার্তুমের আরেকজন বাসিন্দা খুলুদ খায়ের বিবিসিকে বলেন, এখানকার বাসিন্দারা কোথাও নিরাপদ না। বেসামরিক নাগরিকদের আপাতত ঘরে অবস্থান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখানেও নিরাপদ না তারা।

যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও আরব লীগসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এই সংঘাত বন্ধে উভয়পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে। দ্বন্দ্ব নিরসনে মধ্যস্ততার প্রস্তাব দিয়েছে মিসর ও দক্ষিণ সুদান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, সেনা ও আরএসএফের লড়াইয়ে ৮৩ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত ১ হাজারের বেশি।

২০২১ সালের অক্টোবরে অভ্যুত্থানের পর থেকে সুদান একটি জেনারেল কাউন্সিল দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। বিরোধের কেন্দ্রে দুইজন সামরিক ব্যক্তি রয়েছেন, যারা এখন একে অপরকে যেকোনও মূল্যে পরাস্ত করতে চাইছেন।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং কার্যত দেশটির প্রেসিডেন্ট। তার ডেপুটি এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো। তিনি হেমেদতি নামে বেশি পরিচিত। দেশ কোন দিকে যাচ্ছে এবং বেসামরিক শাসনের দিকে প্রস্তাবিত পদক্ষেপ নিয়ে তাদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। দেশজুড়ে আরএসএফ সদস্যদের মোতায়েন করায় কয়েকদিন ধরেই সুদানজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছিল। কারণ সেনাবাহিনী এটিকে হুমকি হিসেবে দেখছিল। তারপরও আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির সমাধান হতে পারে এমন কিছু আশা করা হচ্ছিল। তবে তা হয়নি।

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.