সিরিয়ায় আট বছরের গৃহযুদ্ধে ২৯ হাজারের অধিক শিশু নিহত হয়েছে। এছাড়া ৫ হাজার ৩৪ জন শিশু আটক রয়েছে।
এদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের হাতে ৩ হাজার ৬১৮ জন এবং কুর্দি বাহিনীর হাতে ৭২২ জন। অন্তত ৩২৬ শিশু আটক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের কাছে।
১ কোটির বেশি সিরীয় দেশছাড়া। লন্ডনভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংগঠন দ্য সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ খবর দেয়া হয়েছে।
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। দেশটিতে চলমান সংকট নিয়ে বিপরীত মেরুতে অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য তারা আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে।
একইসঙ্গে তারা আইএসের বিরুদ্ধেও বিমান হামলা চালাচ্ছে।তবে আসাদ সরকারের দাবি, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র মূলত আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। আর রাশিয়া বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।
আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়া-ইরানও আইএস এবং বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, আসাদ সরকার ও ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২২ হাজার ৭৫৩ জন শিশু নিহত হয়েছে।
এর মধ্যে কমপক্ষে ১৮৬ শিশু সরকারের রাসায়নিক হামলায় নিহত হয়েছে এবং ৩০৫ শিশু অপুষ্টি ও ওষুধ স্বল্পতায় মারা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ বাহিনী আসার পর তাদের হাতে ১ হাজার ৯২৮ জন, সিরিয়ার বিরোধী বাহিনীর হাতে ৯৮৪ জন, আইএসের হাতে ৯৫৬ জন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের হাতে ৯২৪ জন ও কুর্দি যোদ্ধাদের হাতে ২১৪ জন শিশু মারা গেছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, গৃহযুদ্ধের কারণে এক কোটিরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এর বেশিরভাগই সীমান্ত পার হয়ে তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে। সম্প্রতি এসব শরণার্থীকে তাদের নিজ দেশে পুনর্বাসন করতে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালায় তুর্কি বাহিনী। এছাড়া সিরিয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলে অবরুদ্ধ হয়ে আছে আরও চার লাখ মানুষ।
তাদের কাছে কোনো ধরনের মানবিক সাহায্য পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।