সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তুরস্কের বাহিনীগুলোর চলমান সামরিক অভিযানের চতুর্থ দিনে সিরিয়ার সীমান্ত শহর রাস আল আইনের চারপাশে তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে। ঘর ছেড়ে পালিয়েছে লাখো মানুষ ।
জাতিসংঘ বলছে, সিরিয়ার জনগণ হাসাকেহ ও তাল তামার শহরের স্কুলসহ অন্যান্য ভবনে আশ্রয় নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিরিয়ার ৬৪ হাজার মানুষের পালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিল। গতকাল শুক্রবার সে সংখ্যা লাখের ঘরে পৌঁছেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর তুরস্ক গত বুধবার এ হামলা চালায়।
তুরস্কের বাহিনী কয়েকদিন ধরে রাস আল আইনে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করার পর শনিবার শহরটিতে তুরস্কের সামরিক বাহিনী ও এসডিএফের মধ্যে তুমুল লড়াই শুরু হয়। শহরটির ওপরে যুদ্ধবিমান চক্কর দিচ্ছে ও সেখান থেকে তীব্র গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
এরইমধ্যে তুরস্ক সমর্থিত সিরীয় বিদ্রোহীদের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তারা তাল আবিয়াদ ও রাস আল আইনের মধ্যবর্তী কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির দখল নিয়েছেন এবং রাস আল আইনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় ১৮টি গ্রাম দখল করেছেন।
বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১১ জন বেসামরিক নাগরিক মারা গেছেন। মানবাধিকার সংরক্ষণ দলগুলো বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে।
কুর্দি-নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স (এসডিএফ) এবং তুর্কিপন্থী দলগুলোর অসংখ্য যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তুরস্ক জানিয়েছে, তাদের হামলায় ২৭৭ জন কুর্দি যোদ্ধা নিহত হন। তুরস্কের সেনাবাহিনী প্রথম কোনো কুর্দি সৈন্যের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা তুরস্ককে আন্তসীমান্ত হামলা শুরুর সবুজ সংকেত দিয়েছে।
২০১১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধের ফলে এই অঞ্চলের বেশির ভাগ অংশ সিরিয়া সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। ২০১৫ সাল থেকে এসডিএফ এ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। ২০১৪ সাল থেকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন সেনাবাহিনীর মূল সহযোগী ছিল এসডিএফ।
তুর্কি বাহিনী কুর্দি মিলিশিয়াদের সাফ করে একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ তৈরির পরিকল্পনা করছে। এখানে সিরিয়ার শরণার্থীদেরও জায়গা দেওয়া হবে। কুর্দি-নেতৃত্বাধীন বাহিনী এ হামলা প্রতিহত করার অঙ্গীকার করেছে।