The news is by your side.

সালমান শাহ’ র জন্য শাবনুরের ভালোবাসা!

সালমান আমাকে পিচ্চি বলে ডাকত, বলতো ‘এই পিচ্চি এদিক আয়’

0 188

 

 

‘আমার খুব ইচ্ছা, ওপারে যেন সালমানের সঙ্গে দেখা হয়। আবার যদি কোনো দিন সালমানের সঙ্গে দেখা হয়, ওকে জিজ্ঞেস করব তুমি কেন আত্মহত্যা করতে গেলা!’ সালমান শাহকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে এভাবেই প্রশ্ন ছুড়লেন শাবনূর।

শাবনূর বলেন, ‘সালমান শাহ আমার খুবই প্রিয় ছিল। আমি তো তখন অনেক ছোট ছিলাম। সে আমাকে পিচ্চি বলে ডাকত, বলতো ‘এই পিচ্চি এদিক আয়’। এগুলো এখন খুব মিস করি।’

১৯৯৪ সালে ‘তুমি আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সালমান শাহ-এর সঙ্গে জুটি বাঁধেন শাবনূর। প্রথম ছবিতেই ব্যাপক সফলতা পায় এই জুটি। সালমান-শাবনূর জুটির সফলতার দিকে তাকিয়ে পরিচালক প্রযোজকেরা একের পর এক ছবিতে নিতে থাকেন তাদের।

সালমান অভিনীত ২৭টি ছবির ভেতরে ১৪টি ছবিতেই সালমানের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। এভাবেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে সবচেয়ে সফল জুটি হিসেবে পরিচিতি পায় সালমান- শাবনূর। এ কথা মনে করিয়ে দিতেই সালমান বন্দনায় মেতে উঠলেন শাবনূর। বললেন, ‘সালমান শাহ অনেক ভালো মানুষ ছিল। অনেক বড় মনের মানুষ ছিল। ভালো  একজন কো আর্টিস্ট ছিল। সালমান শাহ আজ বেঁচে থাকলে আমাদের জুটিটা আরও অনেক জনপ্রিয়তা পেত। হয় তো উত্তম- সুচিত্রা জুটির মতোই হতো।’

কেমন ছিল সালমানের সঙ্গে প্রথম ছবিতে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা। প্রশ্ন শুনে অনেকটা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লেন তিনি। বললেন, ‘সালমানের সাথে আমার প্রথম ছবি ‘তুমি আমার’। তখন তো সালমান মৌসুমী আপুর সাথে অভিনয় করত। শুটিংয়ের সময় মাঝে মাঝে দেখতাম। আমি তো তখন অনেক ছোট ছিলাম। এত কিছু বুঝতাম না। তাই প্রথম অভিনয় করার অনুভূতি বলাটা মুশকিল। পরিচালক আমাকে শুটিং করতে বলেছে জাস্ট শুটিং করেছি। এত কিছু ভাবিনি। এরপর একের পর এক ছবিতে ওর সঙ্গে অভিনয় করলাম। অনেকগুলো ছবি করার পর আমি বুঝতে শুরু করলাম, মানে ম্যাচিউরড হলাম। নিজেদের বোঝাপড়াটাও বাড়ল। ও কোন বিষয়টা কীভাবে ডেলিভারি দিচ্ছে আর আমি কোনটা কীভাবে ডেলিভারি দিচ্ছি সেটা নিয়ে ভাবতাম। নিজেকে ঝালাই করে নিতাম। সালমানের ব্যাপারে আমি একটা কথায় বলব, ন্যাচারাল অ্যাক্টিং যেটা বলে সেটা সালমানের ভেতর ছিল।

শুটিংয়ের ফাঁকে সালমানের সঙ্গে দুষ্টুমিও কম করতেন না শাবনূর। স্মরণ করলেন সেসব মধুর স্মৃতিও-‘আমি ও সালমান দুজনেই শুটিং করার সময় দুষ্টুমি করতাম। শুধু আমার সঙ্গেই নয়, সবার সঙ্গেই ও খুব বন্ধুভাবাপন্ন ছিল, অনেক নম্র ছিল, আর্টিস্ট ডিরেক্টরদের সঙ্গে কীভাবে কাজ করতে হবে তা বুঝত, তাদের সঙ্গে ভালোভাবে মিশতে পারত। ও অনেক মজার মানুষ ছিল। দেখা গেছে যে, মজা করতে করতে কখন যে শুটিং শেষ হয়ে গেছে তা বুঝতেই পারতাম না। ও যেমন হাস্যোজ্জ্বল ছিল, তেমনি অনেক চঞ্চলও ছিল। চটপটে ছিল বলে খুব দ্রুত কাজ করতে পারত। আমি ওর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারতাম না। ও আমাকে মাঝে মাঝেই তাড়া করত।’

সালমানের আত্মহত্যা নিয়েও ছিল নানা গুঞ্জন, নানা প্রশ্ন। আছে এখনো। কথা বললেন সেসব তিক্ত বিষয় নিয়েও। এড়ানো সালমানের স্ত্রী সামিরা প্রসঙ্গও। বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে শাবনূর বলেন, ‘সালমান যেমন হেল্পফুল ছিল, তেমনি সালমানের স্ত্রী সামিরাও অনেক হেল্পফুল ছিল। অনেক ভালো মনের মানুষ ছিল। সামিরাকে নিয়ে যে যাই বলুক না কেন আমি বলব ও অনেক ভালো একটা মেয়ে ছিল। সামিরাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করতাম। ওর সঙ্গে আমার ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক ছিল। সালমানের মৃত্যুর পর আমাদের সম্পর্কে অনেকে অনেক কিছুই লিখেছে। সামিরাকে অনেকে অনেক দোষারোপ করেছে কিন্তু আমি মনে করি সামিরা অনেক ভালো একটা মেয়ে ছিল। ওর সম্পর্কে মানুষ না জেনেই লিখেছে। আমি বলছি কারণ ওকে আমি দেখেছি। আবার অনেকে সালমান ও আমার সম্পর্কে অনেক উল্টা পাল্টা লিখেছে। এটাও ঠিক না। তখন অনেক দুঃখ পেয়েছি। আমরা এত কষ্ট করে জায়গাটা তৈরি করেছি, অথচ আমাদেরকেই দোষারোপ করছে। আমরা তো কোনো অন্যায় করি নাই তাদের।’

ক্ষোভ আর কষ্টের কথা বলতে বলতে হঠাৎ আনমনে প্রশ্ন করলেন সালমানের আত্মহত্যা নিয়েও।  উত্তরও বের করলেন নিজে থেকেই, ‘সালমান কেন আত্মহত্যা করল? আমি নিজেও কিছু জানতে পারি নাই। আমার খুব ইচ্ছা, ওপারে যেন সালমানের সঙ্গে দেখা হয়। ওপারে গিয়ে আবার যদি কোনো দিন সালমানের সঙ্গে দেখা হয়, ওকে জিজ্ঞেস করব তুমি কেন আত্মহত্যা করতে গেলা!’

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.