ভারতের ওটিটি প্লাটফর্ম হইচই থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে ৮টি ওয়েব সিরিজের। এগুলো নির্মাণ করবেন বাংলাদেশের নির্মাতারা। একটি ‘বুকের ভেতর আগুন’। শাহরিয়ার শাকিলের প্রযোজনায় এটি বানাবেন তানিম রহমান অংশু। এতে অভিনয় করবেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও তমা মির্জা।
সিরিজটি গল্প সম্পর্কে হইচই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একজন স্টারকে কেন্দ্র করে এর কাহিনি। যিনি একজন আইকন এবং লিজেন্ড। নব্বই দশকের একজন সুপারস্টারের রহস্যজনক মৃত্যু দেশের মানুষকে স্তব্ধ করে দেয়। যদিও বলা হয় এটি আত্মহত্যা, কিন্তু অনেকেরই বিশ্বাস এটি ছিল একটি হত্যাকাণ্ড। কী হবে যখন একজন পুলিশ অফিসার যে নিজেও কি না সেই সুপারস্টারের একজন ফ্যান? সেই রহস্য উদ্ধারের গল্প নিয়েই এর কাহিনি।
তবে ঠিক কোন তারকার মৃত্যু রহস্য এই সিরিজের উপজীব্য, সেই নামটি অবশ্য নির্মাতা তানিম রহমান অংশু বা প্রযোজক উল্লেখ করেননি সচেতনভাবেই। তবে ট্রেলার ও গল্পের আবহতে স্পষ্ট সিরিজটির গল্প গড়ে ওঠবে দেশের অমর নায়ক সালমান শাহ্’র মৃত্যু রহস্য নিয়েই। কারণ এমন ঘটনা এই বাংলায় আর কোনও সুপারহিট নায়কের বেলায় ঘটেনি। পাশাপাশি সিরিজের নামটিও মনে করিয়ে দেয় সালমান শাহ্র কথা। কারণ এই নায়কের শেষ সিনেমার নাম ‘বুকের ভেতর আগুন’। আর অপূর্ব অভিনীত অংশুর সিরিজটির নাম ‘বুকের মধ্যে আগুন’!
এসব বিষয় বিবেচনা করে সিরিজিটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে অকাল প্রয়াত নায়ক সালমান শাহের পরিবার। নায়কের মা নিলুফার চৌধুরী জানান, সিরিজটি বন্ধের দাবিতে আইনজীবী ফারুক আহমেদের মাধ্যমে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছেন। যার মাধ্যমে সালমান শাহ-এর নামে গান, নাটক, সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন। তাই নয়, ‘বুকের মধ্যে আগুন’ নামে ওয়েব সিরিজ নির্মাতা, কলাকুশলী ও অভিনয়শিল্পীদের বিরুদ্ধে অচিরেই ফরমান জারির কথাও জানান নীলা চৌধুরী।
সেই ফরমান প্রকাশের আগেই সালমান শাহ্’র মামা আলমগীর কুমকুম রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সিলেট জজ কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মইনুল ইসলামের মাধ্যমে।
সেখান বলা হয়েছে, ‘এতদ্বারা সর্ব সাধারনের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে আমার মক্কেল আলমগীর কুমকুম, পিতা- মরহুম মো: কামরুজ্জামান, সাং-মেঘনা এ/২১ দাড়িয়া পাড়া, থানা-কোতয়ালী, জেলা-সিলেট পক্ষে অত্র লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা যাইতেছে যে, আমার মক্কেল চিত্রনায়ক শালমান শাহ, পিতা-মরহুম কামরুদ্দিন আহমদ চৌধুরী মাতা-নীলা চৌধুরী এর মামা, বিগত ০৬/০৯/১৯৯৬ ইংরাজী তারিখে আমার মক্কেলের ভাগনা শালমান শাহকে মৃত অবস্থায় তাহার বাসায় পাওয়া যায়। আমার মক্কেলের ভাগনার রহস্যজনক মৃত্যুকে একটি মহল ভিন্ন ভাবে প্রবহিত করার উদ্দেশ্যে তাহা আত্মহত্যা বলিয়া প্রচার করে। এই নিয়ে আমার মোয়াক্কেলের দায়েরী মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন আছে।
আমার মক্কেল গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করিতেছেন যে, সম্প্রতি একটি মহল আমার মক্কেলের ভাগনার মৃত্যু রহস্য নিয়া ধারাবাহিক সিরিজ নির্মানের পায়তারা করিতেছে। যাহা বাংলাদেশে প্রতিদিন, আনন্দ নগর পত্রিকা ও ফেসবুকে প্রচারিত হইয়াছে। একটি বিচারাধীন বিষয় নিয়া এহেন সিরিজ নির্মাণ করা আইন সম্মত নহে। তাই যে বা যাহারা উক্তরূপ সিরিজ নির্মানের চেষ্টা করিতেছেন, তাহারা এহেন কর্ম হইতে বিরত থাকিবেন। অন্যাথায় আমার মক্কেল আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হইবেন।’
এদিকে এই লিগ্যাল নোটিশ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সিরিজটির পরিচালক, প্রযোজক, হইচই বাংলাদেশ- কেউই কোনো নোটিশ পাননি বলে নিশ্চিত করেন।