বলিউড অভিনেতা সালমান খানের বাড়ির বাইরে গুলি ছোড়ার ঘটনায় উত্তপ্ত মুম্বাই। এই ঘটনার পর পরই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে মুম্বাইয়ের অপরাধ দমন শাখা। এর একদিন পর গ্রেপ্তার করা হয় তৃতীয় এক অপরাধীকে। তাদের জবানবন্দি অনুযায়ী তাপি নদী থেকে একটি বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ।
এবার ওই জায়গা থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে দ্বিতীয় বন্দুক। সঙ্গে মিলল তিনটি ম্যাগাজিন।
পহেলা বৈশাখের দিন আচমকাই বলিউড অভিনেতা সালমান খানের বাড়িতে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দুই বাইক আরোহী এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে সালমানের ‘গ্যালাক্সি’ অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে।
বুলেট গিয়ে লাগে সুপারস্টারের বাড়ির দেওয়ালে। গুলি চালিয়েই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতিকারীরা। এই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। ঘটনার তদন্ত তুলে দেওয়া হয় মুম্বাই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে।
এরপর সালমানের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে।
হামলার ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ভিকি গুপ্ত (২৪) ও সাগর পাল (২১) নামের দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে ভুজ পুলিশ। তাদের ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রিপোর্ট অনুসারে, এই দুজনকে জেরা করেই তাপি নদীতে বন্দুক ও গুলি ফেলার কথা জানতে পারে পুলিশ। অপরাধীরা সুরাটে পালিয়ে যাওয়ার আগে নদীতে বন্দুক আর গুলি ফেলে গিয়েছিল।
দুটি বন্দুকই এখন পুলিশের কাছে। আর সেই সঙ্গে রয়েছে উদ্ধার হওয়া তিনটি ম্যাগাজিন। যাতে কয়েক রাউন্ড বুলেট থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সালমানের বাড়িতে মোট চার রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছিল। জেরার মুখে অপরাধীরা স্বীকার করেছে যে তাদের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র ভয় দেখানো ছিল। ভাইজানকে মারার নির্দেশ ছিল না। এই ঘটনায় বারবার লরেন্স বিষ্ণোইর নাম উঠে আসছে। গত বছর ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে সালমান খান ১০টি গ্যাংয়ের টার্গেট তালিকায় শীর্ষে আছেন। যার মধ্যে রয়েছে কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই-এর নামও। ১৯৯৮ সালের কৃষ্ণসায়র হরিণ শিকারের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল সালমানের। তার পর থেকেই তিনি চলে আসেন বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের নজরে। এর আগেও তারা সালমান খানকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেন। ভাড়া করেছিলেন শার্প শ্যুটার।
বিষ্ণোই এর আগেও বলেছিল যে তাঁর বন্ধু সম্পাত নেহরা সালমান খানের বান্দ্রার বাড়ির দিকে নজরদারি চালিয়েছে। সালমানকে প্রাণে মারার জন্য সঠিক উপায় তৈরির জন্য খোঁজ চালাচ্ছিল সে। হরিয়ানা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের হাতে ধরা পড়ে নেহরা। আপাতত সে-ও রয়েছে কারাগারে।
২০২২ সালে মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে হুমকিমূলক চিঠি পেয়েছিলেন সালমান খান। যেখানে তাকে ও তাঁর বাবা সেলিম খানকে মেরে ফেলার কথা লেখা হয়েছিল। এমনকি কানাডাভিত্তিক পলাতক গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিল, সালমান খান রয়েছেন তাদের হত্যা তালিকায়। গোল্ডি সেই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিল লরেন্সের কথা। বলেছিল, ‘আমরা ওকে মারব, আমরা ওকে মারবই মারব। ভাই সাব (লরেন্স বিষ্ণোই) বলেছিলেন, ওর ক্ষমা চাওয়া উচিত। বাবা তখনই করুণা দেখাবেন যখন তিনি করুণাময় বোধ করবেন। সালমান খান যে বর্তমানে আমাদের টার্গেট, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা সফল হলে তো আপনারা জানতেই পারবেন।’
এই গোল্ডি ব্রারই ২০২২ সালের মে মাসে পাঞ্জাবি গায়ক-রাজনীতিবিদ সিধু মুসেওয়ালার হত্যার পেছনে ছিল। গোল্ডি ব্রারের নাম ছিল কানাডার টপ ২৫ মোস্ট ওয়ান্টেড পলাতকের তালিকায়।