দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। বুধবার রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা তাঁর সরকারি বাসভবনে ঢুকে তাঁকে ও তাঁর বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে জখম করে। ইউএনও ওয়াহিদা খানমের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে ইউএনওকে নিয়ে হেলিকপ্টার ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। আড়াইটার দিকে তাঁকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ঢাকায় পৌঁছে। বেলা তিনটার দিকে তাঁকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তোফায়েল হোসেন ভুঁইয়া জানান, ইউএনও এর মাথার বাম দিকে বেশি আঘাত লেগেছে। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। শরীরের ডান দিকে অবস হয়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার রাত আড়াইটা থেকে ৩টার দিকে ইউএনও’র সরকারি বাসভবনে ২য় তলার ল্যাট্রিনে ভেন্টিলেটর দিয়ে আনুমানিক দুইজন ভেতরে ঢুকে পড়ে। প্রবেশকারীরা প্রথমেই ল্যাট্রিন থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের শোবার ঘরে ঢুকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত শুরু করে। এক পর্যায়ে পাশের রুমে থাকা তার বাবা মেয়েকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে। দুর্বৃত্তরা তাকেও হাতুড়ি পেটা করলে তিনি জ্ঞান হারান।
অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে থাকেন ইউএনও’ও। পাশে থাকা তিন বছরের শিশু পুত্রের আর্তনাদে নাইটগার্ড বের হওয়ার চেষ্টা করলে দেখে ভিতরের দরজা তালা দেওয়া। এরপর তার চিৎকারে পাশের ভবনে অবস্থানরত বিভিন্ন অফিসের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার ও হাসপাতালে পাঠান।
ঘটনার খবর পেয়ে সকালে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম ও পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল উপস্থিত হন।
ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ জানায়, বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে অবস্থিত ইউএনওর বাসভবনের টয়লেটের ভেল্টিলেটর ভেঙে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে।
ইউএনও টের পেলে দুর্বৃত্তরা তাকে সরাসরি ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এ সময় তার বাবা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা তাকেও আঘাত করে পালিয়ে যায়।
ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, ঠিক কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জানার পর এ বিষয়ে জানাতে পারবেন বলে জানান তিনি।
ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের স্বামী রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। ওয়াহিদা খানমের সঙ্গে বাবা ওমর আলী থাকতেন।