অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ায় শিক্ষার মান ধরে রাখা যাচ্ছে না। আর গভর্নিং বডির দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচনের ব্যবস্থা না করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয় মাঝে মধ্যেই। সারা দেশের এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসি) সুপারিশে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলেও রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয় নন-এমপিও শিক্ষক। এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানটিকে সরকারি করার দাবি জানিয়েছেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ, গভর্নিং বডিই দুর্নীতির ক্ষেত্র তৈরি করছেন এবং গভর্নিং ও প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সরাসরি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন। কোটি কোটি টাকা পাবলিক মানি তছরূপ হচ্ছে অথচ দোষীদের শাস্তি দেওয়া যাচ্ছে না।
সম্প্রতি পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডি, অধ্যক্ষের দুর্নীতি চিত্র উঠে আসে। কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। চার শতাধিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অবৈধভাবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরাও বিধিবহির্ভূতভাবে অর্থ উত্তোলন করেছেন। অনেক শিক্ষকের সনদ জাল ধরা পড়েছে ডিআইএ এর পরিদর্শন প্রতিবেদনে। অধ্যক্ষ নিজে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বসবাস করে বাড়িভাড়া নিয়েছেন। অন্যদিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক হওয়ার কারণে সরকারি বাড়িভাড়াও নিয়েছেন। দায়িত্বভাতার নামে লুটপাট করেছেন কোটি টাকা। অর্থ লুটপাটে বিভিন্ন খাত উপখাত তৈরি করে অধ্যক্ষকে অর্থ আত্মসাতের পথ তৈরি করে দিয়েছে গভর্নিং বডি। আর গভর্নিং বডির সভাপতিসহ অন্য সদস্যরা লুটপাটে অংশ নিয়েছেন।
গভর্নিং বডির দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে নতুন গভর্নিং বডি গঠনেরও সুপারিশ করা হয়। বর্তমান গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৯ নভেম্বর। শিক্ষার মানোন্নয়নে গভর্নিং বডি কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা পরিলক্ষিত হয়নি। বরং পরিচালনা কমিটির কার্যক্রমে বিভিন্ন বেআইনি বিধিবহির্ভূত, অনৈতিক এবং আর্থিক অনিয়মের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।