ঘরে-বাইরে কাজের চাপ সামাল দিতে গিয়ে নিজেদের দিকে তাকানোর সময় পান না, এমন যুগলের সংখ্যাই বেশি। যার প্রভাব গিয়ে পড়ে সম্পর্কের উপর।
নিজেদের প্রতি শ্রদ্ধা, সহানুভূতি হারাতে বসেন। কোনও রকমে সম্পর্কের বোঝা বয়ে নিয়ে যেতে হয় দু’জনকে। তবে, কেউ কেউ এরই মধ্যে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করেন। সম্পর্কের রসায়ন যেন ফিকে না হয়, সে জন্য মাঝেমধ্যেই একে অপরকে দীর্ঘ ক্ষণ জড়িয়ে ধরেন। ছুটির দিনে একটু বেশি ক্ষণ সময় কাটান দু’জনে। মনে করেন, দীর্ঘ চুম্বনে বোধ হয় সব ক্ষতে প্রলেপ পড়বে। তা কিন্তু নয়।
সম্পর্কের উষ্ণতা বজায় রাখতে নেটপ্রভাবী এবং মনোবিদ সাগর মুদ্রার পরামর্শ হল ‘৬ এবং ২০ সেকেন্ড রুল’ মেনে চলা। যখনই একে অপরকে চুম্বন করবেন, তা যেন ৬ সেকেন্ড দীর্ঘ হয়। জড়িয়ে ধরার সময়কাল হবে ২০ সেকেন্ড। তার বেশিও হতে পারে। তবে এটিই সবচেয়ে কার্যকর বলে মনে করেন সাগর।
এই গোটা বিষয়টি আমেরিকান গবেষক এবং মনোবিদ জন গটম্যানের মস্তিষ্কপ্রসূত। বহু বছর ধরে তিনি এই বিষয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর মতে, সারা দিনে এইটুকু সময় ব্যয় করলে দাম্পত্য সম্পর্কের বন্ধন গাঢ় হয়। তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকে। সম্পর্কের ভিত মজবুত করতেও এই বিশেষ পদ্ধতিটির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
১) মাত্র ৬ সেকেন্ডের চুম্বনেই শরীর থেকে অক্সিটোসিন হরমোনের ক্ষরণ শুরু হয়। যা একে অপরের প্রতি ভালবাসা, শ্রদ্ধা, টান, আবেগ, অনুভূতি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। জন বলছেন, তার মানে এই নয় যে, ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে আঙুলের ‘কর’ গুনতে হবে। কিন্তু যেটুকু সময় একে অপরকে জড়িয়ে থাকবেন বা চুমু খাবেন, তার সঙ্গে যেন একাগ্রতা এবং মনের নিবিড় যোগ থাকে।
২) ঘরে-বাইরে কাজের চাপ। দিনের পর দিন বাড়তে থাকা মানসিক চাপে সম্পর্ক চিঁড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছে? দাওয়াই হল ৬ সেকেন্ডের চুমু আর ২০ সেকেন্ড জড়িয়ে ধরা। ব্যস, এইটুকুতেই কর্টিসল বা ‘স্ট্রেস’ হরমোন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। মনও শান্ত থাকবে। বাড়ি ‘কাক-চিল’ কেন, সকলেই নির্বিঘ্নে সময় কাটাতে পারবেন।
৩) যুগ বদেলেছে। কর্তা-গিন্নি দু’জনেই কাজ করেন। ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করার পর বাড়ি ফিরে আর কোনও দিকে তাকাতে ইচ্ছে করে না। একে অপরের পাশে বসে দু’-দণ্ড কুশল বিনিময় করতেও কষ্ট হয়। সে ক্ষেত্রে মনে হতেই পারে, সম্পর্কের বাঁধন বোধ হয় আলগা হয়ে যাচ্ছে। তবে চিন্তা নেই। বেশি কথা না বলে মাত্র ২০ সেকেন্ড মনের মানুষটিকে জড়িয়ে ধরুন। দেখবেন, বিজ্ঞাপনের সিমেন্টের মতো আপনাদের সম্পর্কের ভিতও মজবুত থাকবে।