সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ত্রিপুরার পর্যটনের ব্র্যান্ডদূত হতে সম্মতি দিয়েছেন। এর পর থেকেই বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে। যার সঙ্গে জড়িয়েছে রাজনীতি প্রসঙ্গও। কিন্তু সেই আলোচনা ‘পছন্দ’ করছেন না সৌরভ। ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়কের প্রশ্ন, কেন তাঁর সব কিছুতেই রাজনীতি জুড়ে দেওয়া হয়?
ত্রিপুরা পর্যটনের ব্র্যান্ডদূত হওয়াকে কেন্দ্র করে বিজেপির সঙ্গে সৌরভের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছে কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে। বুধবার বেহালার বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ত্রিপুরার পর্যটন দফতরের প্রচার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, সব কিছুতে কেন রাজনীতি টেনে আনা হয়? অমিতাভ বচ্চনের গুজরাতের সঙ্গে, শাহরুখের কলকাতার সঙ্গে, সচিনের কেরলের সঙ্গে, ঋষভ পন্থের উত্তরাখণ্ডের সঙ্গে, ধোনির ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে তো এই ধরনের প্রশ্ন তোলা হয় না। আমার ক্ষেত্রেই কেন? কেউ কারও সঙ্গে কথা বলতে বা দেখা করতে পারবে না? সবই রাজনৈতিক?’’
সব কিছুকে রাজনীতির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধও করেছেন সৌরভ। তিনি বলেন, ‘‘আমি কারও সঙ্গে দেখা করলে, কথা বললে সব কিছুতে রাজনীতি জুড়ে দেওয়া হয়। আমি খুব সাধারণ, সোজাসাপ্টা জীবনযাপন করি। আমার সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলিকেও সে ভাবেই দেখা হোক। সবে গতকাল আমার কাছে প্রস্তাব এসেছে। কিছু করার আগেই সব রাজনীতির সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে। এ সবের কোনও কারণ নেই।’’
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করেন সৌরভ। তিনি বলেন, ‘‘মানিক যখন ত্রিপুরার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, আমি ছিলাম বোর্ড প্রেসিডেন্ট। তখন থেকেই ওঁর সঙ্গে আলাপ।’’ ত্রিপুরার ক্রিকেট আগের থেকে অনেক উন্নতি করেছে বলেও জানান সৌরভ। একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাংলায় আমি যে ভালবাসা পেয়েছি, পৃথিবীর আর কোথাও তা পাইনি। এখানে আমি ব্রাত্য নই। তাই দয়া করে এই বিষয়টিতে রাজনীতির রং লাগাবেন না।’’
পশ্চিমবঙ্গে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সৌরভের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক ‘ঘনিষ্ঠ’ হয়েছিল। ভোটের পর আবার তাতে খানিকটা ‘শৈত্য’ আসে। ত্রিপুরা থেকে সৌরভের কাছে প্রস্তাব যাওয়ার পর সেই ‘বরফ কিছুটা গলেছে’ বলে মত অনেকের। অনেকের আবার দাবি, এখনই এমনটা বলা বাড়াবাড়িই হবে। তবে তাঁরা এটাও মানছেন, সৌরভকে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, বিজেপির সর্বোচ্চ স্তরের ‘অনুমোদন’ না-থাকলে এই প্রস্তাব দেওয়া হত না।
ত্রিপুরা সরকারের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন সৌরভ। অনেকেরই মতে, এ ভাবে বিজেপি এবং সৌরভ দু’পক্ষই একে অপরকে বার্তা দিতে চেয়েছেন। যে বার্তার নিহিত অর্থ হল, সম্পর্কের দরজা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি।