পুরো ম্যাচ একচেটিয়া খেলেও গোলের দেখা পাচ্ছিলো না আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসিদের সামনে যেন চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন চিলির গোলরক্ষক ক্লদিও ব্রাভো। চিলিও ৩বার গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিলো। ৩টিই নিশ্চিত গোল হওয়ার মতো। সেখান থেকে আর্জেন্টিনাকে বাঁচান গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
তবে, লিওনেল মেসিদের আক্রমণের সয়লাব শেষ পর্যন্ত রুখতে পারেননি ক্লদিও ব্রাভো। ৮৮তম মিনিটে মেসির নেয়া কর্নার কিক থেকে ভেসে আসা বল ক্লিয়ার করলেও ফিরতি বলে দারুণ এক শটে চিলির জালে জড়িয়ে দেন পরিবর্তিত হিসেবে মাঠে নামা লওতারো মার্টিনেজ।
এই এক গোলের সুবাধেই চিলিকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে কোপা আমেরিকার `এ‘ গ্রুপ থেকে সবার আগে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে আর্জেন্টিনা।
এদিনও শঙ্কা ঝেঁকে বসেছিল আর্জেন্টিনার। মেসি-ডি মারিয়াদের একের পর এক গোল মিসে হতাশা বাড়ছিল সমর্থকদের মধ্যে। মনে হচ্ছিল ২০১৬ সালে কোপার ফাইনালে চিলির বিপক্ষে এই মাঠে হারের শোধটা আজও নেওয়া হবে না আলবিসেলেস্তেদের। তবে শেষ পর্যন্ত সব শঙ্কা কাটিয়েআর্জেন্টিনাকে কাঙ্ক্ষিত জয়টা এনে দিয়েছেন মার্তিনেজ।
৮৭তম মিনিটে পরপর দুটি কর্নার কিক নেন মেসি। প্রথম শটটিও ছিল একেবারে পোস্টে। পাঞ্চ করে কোনোমতে সেই শটকে পোস্টের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন ব্রাভো। কিন্তু আবারও কর্নার। এক মিনিটের ব্যবধানে আবারও কর্নার শট নেন মেসি। এই শট থেকে আর বাঁচতে পারেনি চিলি।
ম্যাচের প্রথমার্ধে ৬২ শতাংশ বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশে মোট ৯টি শট নিয়েছে আর্জেন্টিনা। যার মধ্যে ৩টিই ছিল অনটার্গেট। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে মেসির নেওয়া জোরাল শটটি তো গোল হতে হাতেও হয়নি শেষ পর্যন্ত। তা না হলে হয়তো প্রথমার্ধেই লিডটা পেয়ে স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যেতে পারত আর্জেন্টিনা।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধেও মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের নিশ্চিত গোল হতে যাওয়া বলটি রুখে দেন চিলির গোলরক্ষক ক্লাদিও ব্রাভো। ৬০ মিনিটে চিলির এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোলের উদ্দেশ্যে জোরাল শট নেন নিকোলাস গনঞ্জালেস। তার সেই শট গোলরক্ষক ঠেকাতে গিয়েও পারেননি। তবে শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার সেই গোলে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার। নিশ্চিত গোল হজম করা থেকে বেঁচে যায় চিলি। আফসোস সঙ্গী হয় আর্জেন্টিনার।
এরপর আক্রমণের গতি কিছুটা কমতে শুরু করলে ৫টি পরিবর্তন আনে কোচ লিওনেল স্কালোনি। কাজও হয় তাতে। শুরুতে সময় লাগলেও ম্যাচের ৮৮ মিনিটে চিলির সর্বনাশটা করে আসেন মার্তিনেজ। গোলটি নিয়ে অফসাইটের দাবি তুলে চিলি। তবে ভিএআর চেকে দেখা যায় অফসাইডে ছিল না মার্তিনেজ। গোলের উদযাপনে মাতে আর্জেন্টিনা। শেষ পর্যন্ত সেই উদযাপন ধরে রেখেই মাঠ ছেড়েছে দলটি।