ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার দীর্ঘ ফোনালাপ হয়েছে।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আমার দীর্ঘ ও অর্থপূর্ণ ফোনালাপ হয়েছে। আমি মনে করি এই ফোনালাপ ও চীনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতির জন্য শক্তিশালী উদ্দীপনা হিসেবে কাজ করবে।
চীনা সরকার জানিয়েছে, ফোনালাপে শি ও জেলেনস্কি ইউক্রেন সংকট নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। এ সময় শি শান্তি আলোচনার প্রতি চীনের সহযোগিতার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।
চীনা সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শি বলেছেন ইউক্রেনে চলমান সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের মধ্যে গভীর যোগাযোগ তৈরি সহযোগিতা করতে ইউক্রেন ও অপর দেশগুলোতে একজন বিশেষ দূত পাঠাবে চীন।
শি আরও বলেছেন, চীন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়া দেখবে না, কিংবা আগুনে ঘি ঢালবে না, কাউকে সুযোগ কাজে লাগিয়ে মুনাফাও করতে দেবে না।
চীনা প্রেসিডেন্ট স্বীকার করেছেন, ইউক্রেন সংকটের গুরুতর আন্তর্জাতিক প্রভাব রয়েছে এবং সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে শুধু এর অবসান সম্ভব।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক টেলিগ্রামে লিখেছেন, এই ফোনালাপ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ।
মার্চ মাসে মস্কো সফরে গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধে চীনের ভূমিকা জটিল। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে চীন। একই সঙ্গে তারা রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরোপের সমালোচনা করেছে। আবার রাশিয়াকে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে, গভীর হচ্ছে দুই দেশের সম্পর্ক।
মস্কো-কিয়েভের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ১২ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে চীন। এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে পশ্চিমা বিশ্ব।
কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, যুদ্ধের আগে চীন-ইউক্রেন সম্পর্ক জোরদার হচ্ছিল। ২০১৯ সালে চীন ছিল ইউক্রেনের বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার। ইউক্রেনীয় বার্লি ও লৌহ আকরিকের শীর্ষ আমদানিকারক ছিল চীন। ইউক্রেন ছিল চীনের বৃহত্তম ভুট্টা সরবরাহকারী এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী। চীনের প্রথম বিমানবাহী রণতরি, লিয়াওনিং ছিল ইউক্রেন থেকে কেনা একটি বাতিল সোভিয়েত জাহাজ যা চীনা নৌবাহিনী সংস্কার করেছে।
শি ও জেলেনস্কির মধ্যে সর্বশেষ ফোনালাপ হয়েছিল দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ৩০তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারিতে।
বুধবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেন ও অপর দেশগুলোতে বিশেষ চীনা দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন লি হুই। তিনি চীনা সরকারের ইউরেশিয়ান বিষয়ক বিশেষ দূত।
লি রাশিয়ায় চীনা রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি রাশিয়ায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন।