বিশেষ প্রতিবেদক
শাহে আলম মুরাদ। রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রলীগের হাত ধরে। এরশাদের স্বৈরশাসন আর বিএনপির দুঃশাসনে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন জগন্নাথ কলেজ ছাত্রলীগের। পরবর্তী সময়ে সংগঠিত করেন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগ থেকে মহানগর আওয়ামী লীগ । অবিভক্ত মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন সংগঠনের চরম দুঃসময়ে। এক- এগারোর রুদ্ধশ্বাস দিনগুলোতে জীবনকে মৃত্যুর কাছে জিম্মি রেখে সংগঠিত করেন মহানগর আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যখন কারারুদ্ধ, তখন তার মুক্তি দাবীতে ২৫ লাখ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রোষানলে পড়েন। বিপদে পড়েন পরিবারের সদস্যরাও। রাতের আধারে এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে কর্মীদের সুসংগঠিত করেন। রাজপথে গড়ে তোলেন দূর্বার আন্দোলন।
মহানগর আওয়ামী লীগ বিভক্ত হলে- দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন শাহে আলম মুরাদ। সাধারণ সম্পাদকের দ্বায়িত্ব নিয়ে মহানগর দক্ষিণের ৭৫ টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও পরিক্ষিত কর্মীদের সমন্বয়ে ওয়ার্ড কমিটি ও থানা কমিটি গঠন করেন। সাংগঠনিক রীতি অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কমিটি অনুমোদন করেন।
সাম্প্রতিক দূর্নীতিবিরোধী অভিযানে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা, এমনকি সরকার দলীয় অনেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে যখন ক্যাসিনো পরিচালনা, চাঁদাবাজি ও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠে; তখন তিনি একজন শুদ্ধাচারী রাজনীতিক হিসেবে সমাদৃত হন কর্মীদের কাছে।
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে যখন পদ প্রতিযোগিতা চলছে; তখনও নিজেকে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী পরিচয়েই গৌরববোধ করেন শাহে আলম মুরাদ।
শাহে আলম মুরাদ বলেন, নেত্রীর নির্দেশে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাই ঠিক করবেন কে, কোন পদে দ্বায়িত্ব পালন করবেন। ব্যাক্তিগতভাবে তার কিছু চাওয়া পাওয়ার নেই বলেও জানান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এই নেতা।
কাউন্সিলে শাহে আলম মুরাদকে ঘিরে নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা অনেক বড়। বর্তমানে সাধারণ সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করলেও আগামী দিনের সভাপতি হিসেবে দেখতে চান মহানগর, থানা ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর কয়েকজন সদস্যের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই মুহুর্তে মহানগর দক্ষিনে শাহে আলম মুরাদের কোন বিকল্প নেই। কর্মীদের সঙ্গে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ, সাংগঠনিক দক্ষতা ও ব্যাক্তিগত সততায় মুগ্ধ বলেও জানান তারা।
কথা হচ্ছিল লালবাগের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের একজন সদস্যের সাথে। তিনি বলেন, “শাহে আলম মুরাদ ভাই আছেন বলেই নগর আওয়ামী লীগ আজ এতটা শক্তিশালী।
” দলীয় কোন পদে নেই, আওয়ামী লীগের একজন প্রবীন সমর্থক- সিরাজ। পুরনো ঢাকায় আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করেন। সিরাজ বলেন, ক্ষমতায় থাকায় এখন অনেকে আওয়ামী লীগের পরিচয় দেন, দুঃসময়ে এসব মুখ দেখিনি। তখন শাহে আলম মুরাদ ভাই আমাদের পাশে ছিলেন।
কর্মীদের প্রত্যাশা, শাহে আলম মুরাদের নেতৃত্বেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ পথ চলবে, মোকাবেলা করবে আগামীদিনের চ্যালেঞ্জ।