ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। শেষ হাসি হাসলেন ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বামপন্থী প্রার্থী লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে হারিয়ে তিনিই হতে চলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
শেষ ধাপের ভোট গণনা শেষে লুলা দা সিলভা পেয়েছেন ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট আর ৪৯ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বলসোনারো।
২০০৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন লুলা। তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও নির্বাচনে জিতে তিনি রাজনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়েছিলেন।
লুলা দা সিলভা ও বলসোনারো দুজন দুই মেরুর রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। লুলা দা সিলভা বামপন্থী রাজনীতিবদ আর বলসোনারোকে কট্টর ডানপন্থী বলে মনে করা হয়। বলসোনারো আগে সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন ছিলেন।
২ অক্টোবর ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই ভোটে লুলা পান ৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট। বলসোনারো পান ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়।
দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণের আগে ডেটাফোলহা ইনস্টিটিউটের সর্বশেষ জরিপে লুলা এগিয়ে ছিলেন। তবে ব্যবধান অনেক কম ছিল। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫২ শতাংশ লুলাকে ও ৪৮ শতাংশ বলসোনারোকে সমর্থন দিয়েছিলেন। জরিপের চেয়েও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা গেছে ভোটের মাঠে।
ইতিমধ্যে লুলার সমর্থকেরা আনন্দ মিছিল করছেন। এর আগে ৬৫ শতাংশ ভোট গণণা পর্যন্ত দুজন সমান সমান ছিলেন। ৭০ শতাংশ ভোট গণনা পর্যন্ত লুলা এগিয়ে যান। এরপর গার্ডিয়ানের তথ্য অনুযায়ী, লুলা শেষ রাউন্ডে বলসোনারোকে ছাপিয়ে যান। ৯০ শতাংশের বেশি ভোট গণনা পর্যন্ত ব্যবধান ধরে রাখেন লুলা। ইতিমধ্যে বলসোনারোর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা কমে আসতে দেখা গেছে। এরপর ধীরে আরও ব্যবধান বাড়িয়ে নেন লুলা।
আগামী জানুয়ারিতে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ব্রাজিলের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নেবেন লুলা। তবে তাঁকে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। নতুন প্রেসিডেন্টের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ করোনা-পরবর্তী সময়ে বিপর্যস্ত অর্থনীতির গতি ফেরানো, নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট লাঘব করা।
নির্বাচনে জয় পাওয়ার পরপরই লুলা দা সিলভাকে অভিনন্দন জানান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। টুইটারে এক পোস্টে তিনি বলেন, দুই নেতা দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক নতুন করে ঠিক করবেন।
নির্বাচনে ফল ঘোষণার পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লুলাকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ, মুক্ত ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও লুলাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি নির্বাচনের পরিবেশের কথা তুলে ধরেন।