রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উদ্বেগজনকভাবে নবজাতকের সংখ্যা বাড়ছে, প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে শতাধিক নবজাতক। এদিকে জনগোষ্ঠী হিসেবে স্থানীয়রা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। ফলে রোহিঙ্গাদের অনিয়ন্ত্রিত শিশু জন্মদান স্থানীয়দের ভাবিয়ে তুলেছে। যেখানে দেশের জন্মনিয়ন্ত্রণ নীতিতে চলমান রয়েছে; (ছেলে হোক মেয়ে হোক দুইটি সন্তানই যথেষ্ট, একটি হলে ভালো হয়) সেখানে একটি রোহিঙ্গা পরিবারে সন্তানের সংখ্যা ৫ থেকে ১০ জনেরও বেশি।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী তিন মাসে মিয়ানমারে সেনা নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। এদের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা নারী গর্ভবতী অবস্থায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে থেকে বাংলাদেশে আশ্রিত ছিল প্রায় আড়াই লাখ রোহিঙ্গা। নতুন করে প্রবেশের পর গত ৫ বছরে শিবিরগুলোতে জন্ম নিয়েছে প্রায় দেড় লাখ শিশু। তবে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বয়ের অভাবে সঠিক তথ্য নেই।
সিভিল সার্জন অফিস ইউএনএইচসিআরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে গত ৫ বছরে ১ লাখ ৩৪ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে। বিষয়টি দেখভাল করার দায়িত্ব পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জানিয়ে কক্সবাজার সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান বলেন, নতুন নতুন রোহিঙ্গা শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার তথ্য মূলত পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কাছে থাকার কথা। আমাদের হাতে মূলত এসব তথ্য থাকে না।
বর্তমানেও সন্তান সম্ভাবা রয়েছে হাজারও রোহিঙ্গা নারী। ফলে বিষয়টি নিয়ে প্রবল উদ্বেগ ও আতঙ্কে রয়েছে প্রশাসন ও স্থানীয় অধিবাসীরা। তাদের মতে যে হারে রোহিঙ্গা শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। যেকোনোভাবে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের জন্মনিয়ন্ত্রণের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে অচিরেই প্রাকৃতিক বৈচিত্র, খাদ্য, চোরাচালান, শ্রমবাজার দখলসহ বিভিন্ন সমস্যায় কক্সবাজারে জনবিস্ফোরণ ঘটবে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতিনিয়ত জন্ম নিচ্ছে নতুন নতুন শিশু। এমনিতে তারা শ্রমবাজার দখল করছে, গাছপালা, পাহাড়-বন উজাড় করেই চলছে। তার ওপর প্রতিদিন নতুন শিশুর আগমনে শঙ্কায় রয়েছে এলাকাবাসী। এভাবে জনসংখ্যা বাড়তে থাকলে পর্যটন শহর কক্সবাজারে নানাভাবে প্রভাব পড়বে।
কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলোর আশকারায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তারা রিলিফের জন্য প্রতিনিয়ত শিশু জন্ম দিয়েই চলছে। চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, মাদক পাচার করছে।
ফলে রোহিঙ্গাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা না গেলে, তা বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ নতুন সংকট তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।