রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
শনিবার রাজধানী বনানীতে হোটেল শেরাটনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ডিপ্লোম্যাটস ম্যাগাজিনের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সমস্যা সমাধানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে কোন্ সরকার ক্ষমতায় তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। সেখানে সামরিক শাসক থাকুক আর গণতান্ত্রিক শাসক থাকুক, তা দেখার বিষয় নয়। মূল বিষয় তাদের সদিচ্ছা। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বিশ্বের ১৩৪ টি দেশ জাতিসংঘে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে মিয়ানমার এখনও আন্তরিক নয়।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে অনেক দেশের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে- মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিজেদের স্বার্থেই বিশ্ব নেতাদের একসঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। এরমধ্যে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জোর পদক্ষেপ নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের জন্য ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার ভাষাণচরে বাংলাদেশ বিনিয়োগ করেছে- মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এতো টাকা খরচ করার মতো ধনী দেশ নয়। তারপরও আমরা করেছি। মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী দেশ। এটা আমাদের কর্তব্য। ২০১৬-২০২২ সালের মধ্যে মানবাধিকারের নেতৃত্বদানকারী দেশগুলো মিয়ানমারে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করছে। যদিও তারা বাংলাদেশ এবং রোহিঙ্গাদের বন্ধু হিসেবে দাবি করে। বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।’
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের ফরেন পলিসি হচ্ছে ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো জন্য শত্রুতা নয়’। ভারত, নেপাল, ভুটান এমনকি মিয়ানমারের সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো। কিন্তু রোহিঙ্গা ফেরাতে মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।
ডিপ্লোম্যাটস প্রকাশনীর নির্বাহী উপদেষ্টা আবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিপ্লোমেটস ম্যাগাজিনের উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ওবায়দুল হক, আর্মড ফোরসেস ডিভিশনের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ষ্টাফ অফিসার লে. জে. (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিদেশী রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য কূটনীতিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।