দেশের রোহিঙ্গাপ্রবণ চার জেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় কঠোর নজরদারি রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া ওইসব এলাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ ব্যতীত কাউকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তবে মহিলারা যাতে তথ্য সংগ্রহ ও রেজিস্ট্রেশন করতে পারে সেজন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে ইসি।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলনকক্ষে ইসি সচিবের সভাপতিত্বে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি-২০১৯ সংক্রান্ত সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়।
সভা শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘চার জেলার ৩২ উপজেলার রোহিঙ্গাপ্রবণ এলাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ ব্যতীত কাউকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। এছাড়া মহিলারা যাতে তথ্য সংগ্রহ করতে ও রেজিস্ট্রেশন করতে পারে এজন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আগামী শুক্রবার থেকে মসজিদের জামাতে মুসুল্লিদের ভোটার হওয়া সম্পর্কে অবহিত করে, সেজন্য ইসলামি ফাউন্ডেশনকে আমরা অনুরোধ করেছি।’
ইসি সচিব আরও বলেন, ‘অনেক নারী ভোটার ছবি তুলতে চান না এ ব্যাপারে ইসলামী ফাউন্ডেশনকে অবহিত করা হয়েছে, যাতে ফাউন্ডেশন প্রচারণামূলক সভা করে জানান যে ছবি তুললে ইসলামের কোনো ক্ষতি হবে না।’
এছাড়াও কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ভোটার হতে উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের তথ্যা সংগ্রহকারীরা যাতে সবার বাড়িতে বাড়িতে যায় আমরা তাদেরকে বলেছি- যারা তথ্য সংগ্রহ করবে তারা যাতে এক জায়গায় বসে তথ্য সংগ্রহ না করে সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি। স্থানীয় পর্যায়ে যারা চেয়ারম্যান, মেম্বার, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর আছেন তারা যাতে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করে এজন্য আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগকে অনুরোধ করেছি।’
এছাড়া ৬৫টি দুর্গম এলাকা আছে সেখানে তথ্য সংগ্রহকারীদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং যাওয়া আসা সহজীকরণ এবং তাদের প্রত্যেকের পরিচয়পত্র দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। আমরা স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের অগ্রিম তথ্য সংগ্রহ করবো যাতে তাদের ১৮ বছর পূর্ণ হলে তারা অটোমেটিকভাবে ভোটার হয়ে যেতে পারে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের জন্য আলাদা ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হবে। একই সঙ্গে দশ আঙুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া বিদেশি নাগরিক ও রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার হতে না পারে সেজন্য যথেষ্ট সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমরা দশ আঙুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশের ছবি নিচ্ছি সেহেতু আমরা চেষ্টা করবো স্মার্ট কার্ড দেওয়ার জন্য।’
প্রসঙ্গত, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করবে ইসি। এবার প্রায় ৮০ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে ইসি কর্মকর্তাদের ধারণা। ১৩ মে পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলবে।