রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাষা শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ করে তুলতে পারলে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তারা কাজ করে খেতে পারবে। বর্তমানে দেশে ধান কাটাসহ অনেক কাজে লোক পাওয়া যায় না। তাদের দিয়ে এ ধরনের কাজ করানো যেতে পারে।
বুধবার রাজধানীর প্রথম আলো কার্যালয়ে প্রথম আলো ও অক্সফামের যৌথ উদ্যোগে ‘আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার ও বাংলাদেশের বাস্তবতা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এ সব কথা বলেন বক্তারা।
তারা আরো বলেন, আমরা তো তাদের (মিয়ানমার) সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে পারব না। যুদ্ধ করলে তখনই রোহিঙ্গাদের ঢল ঠেকাতে পারতাম। তাই এখন আমাদের পরবর্তী কৌশল ঠিক করতে হবে। আমাদের ভাবতে হবে বিদেশের সাহায্য ও এনজিও থেকে যদি তহবিল বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সে পরিস্থিতি কী ভয়াবহ হতে পারে।
রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে পাঠাতে বা পরবর্তী এমন পরিস্থিতি ঠেকাতে আমাদের যদি ৫০ বছর পরও যুদ্ধ করতে হয়, তাহলে তার প্রস্তুতি এখনই নিতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর জন্য এখন থেকে বোঝাতে হবে। এটা শুধু বাংলাদেশের বিষয় না, এটা পুরো পৃথিবীর মাথাব্যথা। এখনো অনেকে রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে জানে না, এটা আমাদের জানাতে হবে।
বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা পাচ্ছেন। আমরাও পাচ্ছি। এটা ভালো লাগার বিষয়। ডলার বা সাহায্য না পেলেও আমরা রোহিঙ্গাদের টাকা দেব। তারা ক্ষুধায় মরবে না। একটা ব্যবস্থা তো হবেই। কিন্তু এ সমস্যা সমাধানের বিষয়েও আমাদের গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে। এটা এভাবে চলতে পারে না। জাতীয়তাবাদ বর্ণবাদকে সামনে নিয়ে আসছে। আগেকার বিভিন্ন সভ্যতার মানুষ অবাধে ঘুরে বেড়াত। কোন সীমানা ছিল না। বাধা ছিল না। ওটাই মনে হয় ভালো ছিল।
আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় কক্সবাজারের কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, আইন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও অভিবাসন বিষয়ক সংসদীয় ককাসের চেয়ারপারসন শামীম হায়দার পটোয়ারী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারপারসন অধ্যাপক মিজানুর রহমান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক তানিয়া হক, জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশের উপ-প্রতিনিধি সু-জেন হ্রি, ইউনিসেফ বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশেরর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস, অক্সফাম বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ ডামলে, উপদেষ্টা টনি মাইকেল গোমেজ ও প্রথম আলোর কূটনৈতিক প্রতিবেদক রাহীদ এজাজ।