রোহিঙ্গাদের অনৈতিক কাজে ব্যবহার করছে এনজিও – মুক্তি কক্সবাজার
প্রকল্প অনুমোদন না দিতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা
কক্সবাজার অফিস
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মুক্তি কক্সবাজারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধকরণ, প্রত্যাবাসন ঠেকাতে তৎপরতা ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়।
সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে নতুন করে কোন প্রকল্প অনুমোদন না দিতে নির্দেশনার পাশাপাশি তাদের কোন প্রোগ্রামেও অংশগ্রহণ না করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের প্রশাসন-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব রাহেলা রহমত উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নির্দেশনার পত্রটি পাঠানো হয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিচালক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক বরাবর। যার স্মারক নাম্বার- ৫৯,০০,০০০০,১০৪,২৭,০০৩,১৮,১৫২।
চিঠিতে, “‘মুক্তি কক্সবাজার’ এর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের অনৈতিক কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধকরণ, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নিরুৎসাহিতকরণ, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা প্রদান ও রোহিঙ্গা গর্ভবর্তী মহিলাদের অনুপ্রেরণামূলক ভাতা, প্রত্যাবাসন কমিশনের নির্দেশনা অনুসরন না করা, প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ে অনিয়ম এবং রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশী স্বার্থবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয় । একই সঙ্গে এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ‘মুক্তি কক্সবাজার’র রোহিঙ্গা সংক্রান্ত নতুন কোন প্রকল্পের অনুমোদন না দেয়া এবং সংস্থাটির রোহিঙ্গা ও অন্যান্য বিষয়ে চলমান প্রকল্প সমূহের কার্যক্রম কঠোর নজরদারীর আওতায় আনতে বলা হয়।
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত ‘মুক্তি কক্সবাজার’ নামীয় এনজিওর কোন কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।”
দীর্ঘদিন ধরে মুক্তি কক্সবাজার রোহিঙ্গা ইস্যুতে নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে। এমনকি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঠেকাতেও সংস্থাটি কাজ করছে বলে অভিযোগ ছিল। এর আগেও নানা অভিযোগে ২০১৯ সালে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তৎকালীন চলমান ৬ টি প্রকল্প বন্ধ করে দেয় সরকার।
চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক পিন্টু কান্তি ভট্টাচার্য জানান, মুক্তি কক্সবাজার জন্মহার বাড়াতে রোহিঙ্গা নারীদের নানাভাবে উৎসাহিত করে। এমনকি সন্তান নিলে মোটা অংকের টাকাও উপহার হিসেবে দেয় তারা। এতে করে ক্যাম্পে জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও প্রত্যাবাসন ঠেকানো সহ নানা অপতৎপরতার বিষয়েও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার বলেন, যেসব অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে তা সত্য নয়। এছাড়াও তিনি এসংক্রান্ত কোন নোটিশ বা চিঠি পাননি বলে দাবী করেন।