আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস সামনে রেখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফরে যাননি। ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এ সফর স্থগিতের কোনো কারণ না।
শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে প্রত্যাগত প্রবাসী আওয়ামী ফোরামের প্রথম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
দিল্লি ডায়ালগ ও ইন্ডিয়ান ওশান ডায়ালগ উপলক্ষে তিন দিনের সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। তার আগে দুপুরে হঠাৎ করেই এই সফর বাতিলের কথা জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
আর দেশটির মেঘালয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার আমন্ত্রণে শুক্রবার বেলা ১১টায় সিলেটের তামাবিল হয়ে মেঘালয়ে যাওয়ার কথা ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। তার আগের দিন রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু মন্ত্রীর এই সফর স্থগিতের কথা জানান।
ভারতে ‘বিতর্কিত’ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের পর এ নিয়ে বিক্ষোভ-উত্তেজনার মাঝে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফর বাতিল করেছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিজয় দিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আমাদের দুয়ারে কড়া নাড়ছে। তাই রাষ্ট্রীয় ব্যস্ততার কারণে তারা এই সফরে যাননি। তবে পরবর্তীতে যাবেন তারা। সফর চিরতরে বাতিল হয়নি।
বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের গঠনমূলক বন্ধুত্ব রয়েছে। এটা যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়; সে ব্যাপারে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমাদের কোনো বিষয়ে সমস্যা হলে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।
‘ভারত একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশের ঘটনা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেখানে আমাদের মন্তব্য করা সমীচীন নয়।’
তিনি বলেন, তবে যদি সে আইন বাংলাদেশে কোনো প্রভাব ফেলে, আমরা যদি এফেক্টেড হই; অব্যশই আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে বক্তব্য থাকবে। আর ইতিমধ্যে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে বক্তব্য রাখা হয়েছে। সেই বক্তব্যের বাইরে আমার কোনো ভিন্ন বক্তব্য নেই।
তিনি আরও বলেন, শুধু এটুকু বলতে চাই, শেখ হাসিনার সরকারই হচ্ছে পঁচাত্তর-পরবর্তী একমাত্র সংখ্যালঘুবান্ধব সরকার। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল উদাহরণ হচ্ছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মাঝে মাঝে হয়তো একটা-দুটো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে…এতো মানুষ, এখানে দুর্বৃত্ত আছে। দুর্বৃত্তায়নের চক্র আমরা ভেঙে দিতে চাই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হলে কোনো দলীয় পরিচয়ে হয় না। দুর্বৃত্তদের কোনো দল নেই। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বলতে যেটা বোঝায়, সেটির দগদগে চিত্র দেখা যাবে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যালঘুদের ওপর যে বর্বরতা হয়েছে তার সঙ্গে। সেটি কেবল একাত্তরের বর্বতার সঙ্গে তুলনা করা চলে।’