রাশিয়ায় শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনের ভোট গ্রহণ। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইউক্রেনের রুশ অধিকৃত অঞ্চলসহ রাশিয়ার সব ভোটারকে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে অংশ নিতে বলেন তিনি। রাশিয়ার ১১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ এই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার যোগ্য।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, কমিউনিস্ট পার্টির নেতা নিকোলাই খারিটোনভ, নিউ পিপলস পার্টির নেতা ভ্লাদিস্লাভ দাভানকভ এবং লিবারেল ডেমোক্রেসি পার্টির নেতা লিওনিড স্লুুটস্কি এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। প্রার্থীদের মধ্যে কেউই যদি প্রদত্ত ভোটসংখ্যার অর্ধেকের বেশি ভোট না পান, তাহলে প্রথম নির্বাচনের ২১ দিন পর পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে সর্বাধিক ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে তখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
বিভিন্ন জনমত জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার তিন প্রতিদ্বন্দ্বীর তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা নেই। সুতরাং ঐ তিন প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটে বিজয়ী হবার তেমন সুযোগ নেই। রাশিয়ার জনমত রিসার্চ সেন্টারের জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, পুতিন শতকরা ৮২ ভাগ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হবেন।
যেহেতু পুতিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে আরও ছয় বছরের জন্য নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাই নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় খুব কম নাটক রয়েছে। তবে বরাবরই পুতিন শেষ দিকে যা করেন তা হলো, মনোযোগ আকর্ষণ করা যা অনেক পর্যবেক্ষকের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করে। খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের
গতকাল এক ভিডিও বার্তায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিন বলেছেন, আমাদের এখন ঐক্য ও সংঘবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়া অত্যাবশ্যক। আপনাদের দেওয়া প্রতিটি ভোটই মূল্যবান। আগামী তিন দিন আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার আহ্বান জানাচ্ছি। তিন দিনব্যাপী এই নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলবে রোববার পর্যন্ত। এর মধ্য দিয়ে তিন দশক রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। দীর্ঘমেয়াদি এই ক্ষমতায়ন পুতিনকে আরও শক্তিশালী হিসেবেই প্রমাণ করবে। ইউক্রেন আক্রমণের পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার অর্থনীতির আশ্চর্যজনকভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় থাকা তাঁর অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
একাধিক মতামত জরিপে পুতিনকে অধিকাংশ রাশিয়ান নাগরিকের সমর্থন পেতে দেখা গেছে। গত মাসের এক জরিপে পুতিন ৭৫ শতাংশ মানুষের সমর্থন পেয়েছিলেন। দুই বছর আগে পুতিন যখন ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দেন, তখনও তাঁকে দেখে মনে হতো, তিনি বিপদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছেন। আর এখন মনে হচ্ছে, পরিস্থিতি তাঁর অনুকূলে। এ ছাড়া ক্ষমতার ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়ারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।