ইরান রাশিয়ার কাছে ড্রোন বিক্রি করছে—ইউক্রেনের এমন অভিযোগের ‘যথাযথ প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার কাছে যুদ্ধবিমান বিক্রির বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেনি ইরান।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল শনিবার এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেন, বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন সব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনমনে ইউক্রেনের সিদ্ধান্ত ‘দুঃখজনক’, যেসব প্রতিবেদনের সত্যতার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিবৃতিতে কানানি মস্কোকে তেহরানের ড্রোন সরবরাহের কথা স্পষ্টভাবে অস্বীকারও করেননি। তবে কানানি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইরান ‘নিরপেক্ষতার একটি স্পষ্ট নীতি’ গ্রহণ করেছে। কারণ, ইরান আলোচনার মাধ্যমে এ সংকট সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে।
কানানি আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া এবং ইউক্রেনীয় শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আমাদের দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অসংখ্য বৈঠক এবং ফোন কল সংকট সমাধানে সহায়তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, অবন্ধুসুলভ আচরণে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। কারণ, ইউক্রেনীয় বাহিনী সম্প্রতি রাশিয়ার কাছে বিক্রি করা এবং সংঘাতে ব্যবহৃত মোট আটটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এসব ড্রোন ইরানের তৈরি।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনে ইরানের রাষ্ট্রদূতকে তাঁর স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত এবং কিয়েভে ইরানি দূতাবাসের কর্মীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেনের সামরিক সূত্রের বরাতে বলা হয়, শাহেদ-১৩৬ ড্রোন এবং শক্তিশালী মোহাজের-৬ ড্রোনগুলো ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ভূপাতিত করা হয়।
ব্রিটিশ সামরিক গোয়েন্দারা ইউক্রেনের এই দাবিকে সমর্থন করে বলেছিল, ‘সম্ভবত’ রাশিয়া এই যুদ্ধে ইরানের তৈরি ড্রোন ব্যবহার করছে। মার্কিন কর্মকর্তারা গত জুলাই থেকে দাবি করে আসছেন যে তেহরান মস্কোর কাছে কয়েক শ যুদ্ধবিমান বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পরে আরও বলা হয়, ইরান কীভাবে ড্রোন ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে রুশ সেনাদের প্রশিক্ষণও দিয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর আগে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিল যে তারা যুদ্ধে কোনো পক্ষকে সহায়তা করবে না। তেহরান বিশ্বাস করে যে ন্যাটো সংঘাতের মূল কারণ।