রাজনন্দিনী বসু
গণঅভ্যুত্থান এবং সেনাবাহিনীর অনুরোধে পদত্যাগ করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। প্রথমে তিনি বলেছিলেন, পদত্যাগ করবেন না। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি সরে দাঁড়ান। এরপর নেপালে রাষ্ট্রপতিও পদত্যাগ করেন। নেপালের মন্ত্রী এবং শীর্ষ স্থানীয় আমলাদের দৌঁড় করিয়ে রাস্তায় ফেলে মারে জনতা।
নেপালের সেনা প্রধান অশোক রাজ সিদগেল জানিয়েছেন, আপাতত দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার দায়িত্ব নিচ্ছে বাহিনী। এরই সঙ্গে তিনি নীরবেই যেন রাজতন্ত্র ফেরার বার্তা দিয়ে গেলেন দেশবাসীকে।
জাতির উদ্দেশে যখন নেপালের সেনা প্রধান ভাষণ দিচ্ছেন, তখন তাঁর পিছনে ছিল নেপালের পতাকা। এবং নেপালের প্রথম রাজা পৃথ্বীনারায়ণ শাহের মূর্তির ছবি। আর তা থেকেই অনেকে ধারণ করছে, নেপালে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার বার্তাই নীরবে দেওয়ার চেষ্টা করলেন সেনা প্রধান অশোক রাজ সিদগেল।
নেপালে এই পালাবদলের নেপথ্যে যে আন্দোলন হয়, সেটি ছিল মূলত দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন। তবে চলতি বছরেই শুরুর দিকে নেপালে রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল। কাঠমান্ডুতে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল। সংসদীয় ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ২০০৮ সালে নেপালে ২৪০ বছরের রাজতন্ত্রে ইতি টানা হয়েছিল। যদিও মাঝেমধ্যেই রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবি তোলেন অনেকেই।
জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নেপালের সেনাপ্রধান বলেন, ‘যদি এই ধরনের কার্যকলাপ অব্যাহত থাকে, তাহলে নেপালি সেনাবাহিনী সহ সমস্ত নিরাপত্তা সংস্থা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সিদ্ধান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ সাধারণ জনগণকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির বিষয়ে নেপালকে আশ্বস্ত করেছেন সেনা প্রধান। অস্থিরতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে তিনি নাগরিক, জাতীয় সম্পদ এবং কূটনৈতিক মিশন রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর দায়িত্বের উপর জোর দিয়েছেন।
জাতির উদ্দেশ্যে এক ভিডিও ভাষণে সিগদেল প্রতিবাদী গোষ্ঠীগুলিকে তাদের আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করার আবেদন জানান। উত্তেজনা কমাতে তিনি আলোচনার আহ্বান জানান। নেপালের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে যাঁদের নাম উঠে আসছে তাঁদের মধ্যে রয়েছে বলেন্দ্র শাহ। কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহ বলেছেন যে, সংসদ ভেঙে না দেওয়া পর্যন্ত কোনও আলোচনা হবে না।