মেট্রো রেলে ৫০ শতাংশ ভাড়া কমিয়ে সর্বনিম্ন ১০ টাকা ভাড়া করার দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
আজ শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি জানান।
মোজাম্মেল হক বলেন, ঢাকা ও ভারতের কলকাতা শহরের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, মাথাপিছু আয় ও গড় জিডিপি বিবেচনায় নিলে প্রায় সব সূচকে সমান অবস্থানে থাকলেও কলকাতার মেট্রো রেলের তুলনায় ঢাকার মেট্রো রেলে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া দ্বিগুণ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভারতের কলকাতায় মেট্রো রেলের ভাড়া সড়ক পরিবহনের তুলনায় সবচেয়ে কম। কলকাতায় মেট্রো রেলের সর্বনিম্ন ভাড়া পাঁচ রুপি বা ছয় টাকা। আর ঢাকায় মেট্রো রেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। কলকাতায় মেট্রো রেলের সর্বোচ্চ ভাড়া ২৫ রুপি বা ৩১ টাকা। ঢাকায় মেট্রো রেলের সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা। কলকাতায় পাঁচ রুপি বা ছয় টাকা দিয়ে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়, ১০ রুপিতে পাঁচ কিলোমিটার, ১৫ রুপিতে ১০ কিলোমিটার, ২০ রুপিতে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়।
২০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের জন্য সর্বোচ্চ ২৫ রুপি বা ৩১ টাকা লাগে। বাংলাদেশে উত্তরা থেকে মতিঝিল ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রো রেলের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা, যা কলকাতার মেট্রো রেলের চেয়ে চার গুণ বেশি।
পাকিস্তানের লাহোরে অরেঞ্জ লাইন মেট্রো রেলের সর্বনিম্ন ভাড়া পাকিস্তানি ২০ রুপি বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ টাকা। ২৭ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য সর্বোচ্চ ৪০ রুপি বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮ টাকা লাগে। লাহোরের মেট্রোতে প্রথম চার কিলোমিটার ২০ রুপি বা ৯ টাকা। পাঁচ কিলোমিটার থেকে আট কিলোমিটারের জন্য ২৫ রুপি বা ১১ টাকা, ৯ থেকে ১২ কিলোমিটরের জন্য ৩০ রুপি বা ১৪ টাকা লাগে। ১৩ থেকে ১৬ কিলোমিটারের জন্য ৩৫ রুপি বা ১৬ টাকা লাগে। ১৬ থেকে ২৭ কিলোমিটারের জন্য ৪০ রুপি বা ১৮ টাকা লাগে।
গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আবদুল হক বলেন, মেট্রো রেলের বিদ্যমান ভাড়া কমানোর পাশাপাশি নিয়মিত যাত্রীদের মাসিক কার্ডে বিশেষ ভর্তুকি প্রদান, বন্ধের দিনে আকর্ষণীয় ভাড়া হার নির্ধারণ, মেট্রো থেকে নামার পর হাঁটার পরিবেশ তৈরির জন্য ফুটপাত পরিষ্কার রাখা, কানেক্টিং রোডে পর্যাপ্ত বাস ও অন্যান্য গণপরিবহনের ব্যবস্থা রাখা, বিশেষ বিশেষ স্টেশনগুলোতে কার ও বাইসাইকেল পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা এবং মেট্রো রেলের পরিচালনা পরিষদে যাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব রাখার ব্যবস্থা করা দরকার।
এ সময় অন্যদের মধ্যে নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ, মনজুর হোসেন ইশা, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি তাওহিদুল হক ও যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক উপস্থিত ছিলেন।