মেট্রোরেলের সব ধরনের যাত্রী সেবায় মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের মূসক নীতির প্রথম সচিব মোহাম্মদ হাসমত আলীর সই করা বিশেষ আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ভ্যাট অব্যাহতির এই সুবিধা ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। গত বছরের সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে এ ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা কার্যকর হবে।
রোববার এনবিআর থেকে ইস্যু করা বিশেষ আদেশে বলা হয়েছে, মেট্রোরেল বাংলাদেশের প্রথম সর্বাধুনিক গণপরিবহণ। মেট্রোরেল যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি কর্মঘণ্টা সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সে কারণে মেট্রোরেল চালু হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে অধিক জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে এই গণপরিবহণে যাতায়াত ব্যয় সাশ্রয়ী করা প্রয়োজন। তাই মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪৭ নং আইন) এর ধারা ১২৬ এর উপ-ধারা (৩) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মেট্রোরেল সেবার ওপর আরোপিত মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেওয়া হলো।
বর্তমানে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলাচল করে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভাড়া ৬০ টাকা। মতিঝিল পর্যন্ত চালু হলে উত্তরা থেকে ভাড়া হবে ১০০ টাকা।
বর্তমান ভ্যাট আইন অনুযায়ী, যেকোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেলের টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের বিধান আছে। ঢাকার মেট্রোরেল পুরোপুরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং এটি একটি গণপরিবহন। সে কারণেই মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট আরোপের আহ্বান জানিয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডকে (ডিএমটিসিএল) গত ২২ জানুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার শওকত আলী সাদী চিঠি দেন। ওই চিঠিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচ হিসেবে মেট্রোরেলে চলাচলকারী যাত্রীদের টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের কথা বলা হয়। সে অনুযায়ী ভ্যাট বসানো হলে মেট্রোরেলের টিকিটের দাম বাড়ত। অর্থাৎ ৬০ টাকার টিকিটের দাম দাঁড়াত ৬৯ টাকায়।
এর আগে গত ১৯ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেট অফিস থেকে ভ্যাট আরোপের বিষয় যথাযথ নির্দেশনা চেয়ে এনবিআরের ভ্যাট নীতি বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়।
ঢাকা মেট্রোরেল কোম্পানি চিঠির জবাবে জানায়, মেট্রোরেলে অভিজাত শ্রেণীর যাত্রী ভ্রমণ করে না, সব শ্রেণীর মানুষ একই ভাড়া দিয়ে ওঠে। তাই এ ধরনের পরিবহনে ভ্যাট প্রযোজ্য হবে না।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের দাবি মেনে এবার পরিবহণটির যাত্রীসেবার ওপর ভ্যাট অব্যাহতি দিলো এনবিআর।