কলকাতা ! আইন আছে। শাস্তির বিধানও আছে। তবে বাস্তবে তার কার্যকারিতা নেই। আর সে কারণেই প্রকাশ্যে, জনবহুল এলাকায় চলছে অবাধ ধূমপান।
রবিবার ছিল বিশ্ব ধূমপানহীন দিবস। বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে যা ছবি চোখে পড়ল তা যথেষ্টই উদ্বেগজনক।
যশোর রোড দিয়ে সাইকেল চালিয়ে পাশাপাশি যাচ্ছিলেন দুই ব্যক্তি। দেখা গেল মুখে মাস্ক নেই। দু’জনের মুখেই জ্বলন্ত বিড়ি। সড়কের পাশে এক ভ্যান চালক ভ্যান রেখে ভ্যানে বসেই বিড়িতে টান দিচ্ছিলেন। বনগাঁ-বাগদা সড়কে দেখা গেল ভ্যানে চেপে এক ব্যক্তি যাচ্ছেন। মুখের মাস্ক নীচে নামানো। তিনিও সিগারেটে সুখটান দিচ্ছিলেন। গাইঘাটা, বাগদা, গোপালনগর, হাবড়া, অশোকনগর— সর্বত্রই এক চিত্র।
এখন দেশে করোনা পরিস্থিতি চলছে। চিকিৎসকেরা ধূমপান করতে নিষেধ করছেন। তারপরেও অনেক মানুষ সচেতন হচ্ছেন না। প্রকাশ্যে লোকালয়ের মধ্যে কেউ ধূমপান করলে তার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। সংক্রমিত হতে পারেন ওই ব্যক্তি নিজেও, মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে (আইএমএ) বনগাঁ শাখার সম্পাদক, চিকিৎসক আশিসকান্তি হীরার কথায়, ‘‘করোনা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ধূমপান বাড়তি সমস্যা। কারণ, ধূমপানের অভ্যাস থাকলে এমনিতেই ফুসফুস দুর্বল হয়ে পড়ে। দেখা যাচ্ছে, করোনাভাইরাস মূলত রক্তের উপর প্রভাব ফেললেও শেষ পর্যন্ত ফুসফুসের উপরেও প্রভাব ফেলছে।’’ চিকিৎসকের মতে, করোনাভাইরাসে যদি কোনও ধূমপায়ী আক্রান্ত হন, সে ক্ষেত্রে সমস্যা জটিল হয়ে দাঁড়াতে পারে।
নিয়মিত ধূমপান ফুসফুস ছাড়াও যকৃৎ, পাকস্থলি, হার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। নিজের ক্ষতির পাশাপাশি ধূমপানের ফলে পাশের লোকেরও ক্ষতি হয়।
দোকানের বাইরে সিগারেট-বিড়ির বিজ্ঞাপন দেওয়া নিষিদ্ধ থাকলেও অনেক এলাকায় তা দেওয়া হয়েছে বলেও চোখে পড়ল এ দিন। স্কুল-কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে সিগারেট বিড়ি বিক্রি করা যায় না। বাস্তবে তা-ও মানা হয় না। তবে স্টেশনগুলিতে সাম্প্রতিক সময়ে সিগারেট টানা বন্ধ হয়েছে অনেকটাই।
এক ধূমপায়ীর কথায়, ‘‘সিগারেট ছাড়তে তো চাই। দোকানে বিক্রি বন্ধ হলে হয় তো আমাদের মতো অনেকেই ছেড়ে দেবেন এই নেশা।’’
লকডাউনে বাড়িতে থাকলে অনেক সময়ে স্ত্রী-সন্তানের চাপেও অনেকে ধূমপান কমিয়েছেন বলে জানালেন।