মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ব্যবহার করে গড়ে ওঠা কিছু প্রতিষ্ঠানের বিতর্কিত ও গণবিরোধীকর্মকাণ্ডের কারণে দেশে-বিদেশে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাগণ হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন; যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনে ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ নামের একটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সমর্থকদের ওপর হামলার পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানান মুক্তিযোদ্ধারা। এতে স্বাক্ষর করেছেন ১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা বেশ কিছুদিন ধরে উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ব্যবহার করে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে যাদের বিতর্কিত ও গণবিরোধীকর্মকাণ্ডের কারণে দেশে-বিদেশে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাগণ হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন।’
এতে বলা হয়, অতিসম্প্রতি ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ নাম ব্যবহার করে কতিপয় সুবিধাবাদী, গণবিরোধী ও দেশদ্রোহী যুবক এদেশের ছাত্রসমাজের সভা-সমাবেশে দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে। তারা লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনো ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা দেখিনি।
মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বিভিন্ন দেশে চলমান ঔপনিবেশিক বর্ণবাদী ধর্মবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণের লড়াই-সংগ্রামে সংহতি জানাতে রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবেই অঙ্গীকারাবদ্ধ। তথাকথিত ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ বা মুক্তিযুদ্ধের সাথে সংশ্লিষ্ট নাম আগে-পিছে বসিয়ে যারা সেই মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা এবং রাষ্ট্রের সাংবিধানিক অঙ্গীকার পরিপন্থি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, তারা যে দল বা মতেরই হোক, তারা দেশদ্রোহী। আমরা তাদের অবিলম্বে চিহ্নিতকরে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এতে বলা হয়, একটা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের রাষ্ট্র নির্মাণের যে অঙ্গীকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, জীবনের শেষ পর্যায়ে এসেও আমরা তার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার থেকে সরবো না।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষরকারী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে রয়েছেন- নঈম জাহাঙ্গীর, মিজানুর রহমান খান (বীর প্রতীক, ফারুক্-ই-আজম (বীর প্রতীক), আলতাফ হোসেন ( সেক্টর-৩ ), সাদেক হোসেন ( সেক্টর -২), শেখ রফিকুর ইসলাম বাবলু, অনিল বরণ রায় ( নৌ- কমান্ড ), মনোয়ারূল ইসলাম ( সেক্টর-৬ ), আব্দুল কাইয়ুম খান ও বদরুল আমিন।