মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক নূরুল হুদার অপসারণ দাবি
খালেদা জিয়াকে মা ডাকতেন কবি নূরুল হুদা
কবিতার মধ্যদিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অপমানসহ নানা অভিযোগ এনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার অপসারণ চেয়েছেন বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক নূরুন নবী ভোলা।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি। এ সময় পাঠাগারের সাধারণ পাঠকরাও নূরুল হুদার অপসারণের দাবি জানান।
নূরুন নবী ভোলা বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আদর্শ ও চেতনাবিরোধী এবং বিএনপি-জায়ামাতের আশীর্বাদপুষ্ট, জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক সাব্যস্তকারী সুবিধাবাদী মুহম্মদ নূরুল হুদার মতো ব্যক্তি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে থাকা জাতির জন্য লজ্জাজনক। এটা বাংলাদেশের সুস্থ শিল্প-সংস্কৃতি ও সাহিত্যের জন্য একটি অশনি সংকেত।’
তিনি বলেন, ‘নূরুল হুদা কার পক্ষে লিখলেন, কার বিপক্ষে লিখলেন সেটা বিষয় না। তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে লিখেছেন। সারা বিশ্ব জানে, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। অথচ তিনি লিখেছেন, মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক।’
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করেছেন মন্তব্য করে ভোলা বলেন, ‘তিনি গিরগিটির মতো রঙ বদলান। আওয়ামী লীগের সময় আওয়ামী, বিএনপির সময় বিএনপি।’
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘বাংলা একাডেমিতে চাকরির ক্ষেত্রে পদোন্নতি, বই বের করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি নানা ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।’
পাঠাগারের নিয়মিত পাঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহিদা বেগম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘কবি নূরুল হুদাকে আমি শৈশব থেকে চিনি। তিনি আগে বাসাবোতে ছিলেন, আমার বাবার বাড়িও সেখানে। তিনি নিজেকে জাতিসত্তার কবি বলেন। একদিন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি যে কবিতা লেখেন, তা বুঝতে তো ডিকশনারি ঘাটতে হয়। তখন তিনি বলেছিলেন, এই কবিতা কবিদের জন্য, তোমার জন্য না।’
‘খালেদা জিয়াকে মা ডাকতেন কবি নূরুল হুদা’ এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে তিনি প্রায়ই দেখা করতেন এবং যোগাযোগ করতেন। এ সব করে তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটের পরিচালক হয়ে গেলেন। সেখানে হেন অপরাধ নাই, যা তিনি করেননি। সেখানে তিনি এখান-ওখান থেকে নিয়ে অনেকগুলো বই বের করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কবি নূরুল হুদা নিজের চেহারা বদলে ফেলেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনাকে কটাক্ষ করে কবিতা লিখেছেন। কিন্তু এখন নিজেকে সবচেয়ে বড় মুজিবসেনা হিসেবে জাহির করেন।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নূরুল হুদার অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেন তারা।