মিয়ানমার ফিরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইউএনএইচসিআর। রোববার (৬ জুন) সকাল থেকে খাবার বন্ধ করে দেওয়ার পর সিআইসি অফিস থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত খাবার দেওয়া হয়। একপ্রকার অনাহারে দিন পার করেছেন ভাসানচর থেকে উখিয়ার ট্রানজিট ক্যাম্পে আসা ৪ পরিবারের নারী ও শিশুসহ অন্তত ২৩ রোহিঙ্গা।
স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে চলে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে গত ২৪ মে নোয়াখালীর ভাসানচর থেকে উখিয়ার ট্রানজিট ক্যাম্পে এসে উঠেছে চার রোহিঙ্গা পরিবারের ২৩ জন সদস্য। তারা মিয়ানমারে চলে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এদিকে, মিয়ানমারে ফিরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের মাঝে ইউএনএইচসিআরের খাবার দেওয়া বন্ধ- এ খবর প্রত্যাবাসনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের রাজি করানোর দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ইতিমধ্যে রোহিঙ্গারা খাবার বন্ধ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সম্মানজনক প্রত্যাবাসন কামনা করা রোহিঙ্গাদের অনেকে বলছেন, ইউএনএইচসিআর কি তাহলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হোক এটা চায় না? তা নাহলে তারা মিয়ানমারে যেতে চাওয়া লোকজনকে খাবার দেওয়া কেন বন্ধ করলো?
রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, মিয়ানমারে যাওয়ার আগে যদি এমন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তাহলে সামনে প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের রাজি করাতে কষ্ট হবে। সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাঝে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রোববার থেকে হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই মিয়ানমারে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের (রেশন) খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইউএনএইচসিআর। এতে করে আমরা চরম বেকায়দায় পড়েছি।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্পে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। তাদের ফেরত নিতে প্রত্যাবাসন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। চুক্তি স্বাক্ষর করলেও রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে একটি ত্রিপক্ষীয় কমিটি। এ কমিটি একাধিক সভা করলেও প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। তবে খুব দ্রুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যবাসন শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।