The news is by your side.

ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিত্রদের পাশে পাচ্ছেন না ট্রুডো

0 108

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত সোমবার পার্লামেন্টে দাবি করেন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিক শিখ নেতা হরদীপ সিং হত্যায় ভারত সরকার জড়িত থাকতে পারে বলে তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আছে। এরপরেই দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। এই দাবি পর ভারত ও কানাডার মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা এখন চরমে। ইতোমধ্যে দুই দেশই পরস্পরের কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। এরপর গত বৃহস্পতিবার কানাডীয় নাগরিদের জন্য ভিসা স্থগিত করে ভারত।

ভারতের সঙ্গে এমন দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বিশ্বমঞ্চে একা হয়ে পড়েছেন ট্রুডো। চলতি সপ্তাহে নিউইয়র্কে ট্রুডো যখন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তখন তার মুখের হাসি মলিন হতে শুরু করে। সাংবাদিকরা প্রায় সব প্রশ্নই করেন ভারতের বিরুদ্ধে তোলা ট্রুডোর অভিযোগের বিষয়ে।

এদিন প্রশ্নের জবাবের উত্তর সতর্কভাবে দেন ট্রুডো। তিনি বলেছেন, আমরা কাউকে উস্কানি দিতে চাই না বা কোন সমস্যা তৈরি করতে চাই না। আমরা আইনের শাসনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছি।

কয়েকজন সাংবাদিক তখন প্রশ্ন করেন , কানাডার মিত্ররা কোথায়? ট্রুডোকে উদ্দেশ্য করেন একজন সাংবাদিক মন্তব্য করেন, প্রয়োজনের সময়ে আপনাকে একা মনে হচ্ছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাদা চোখে অন্তত এখন পর্যন্ত এটাই মনে হচ্ছে , ভারতের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ার সময় ট্রুডোকে পুরোপুরি একাই দাঁড়াতে হয়েছে।

ভারত বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ, জনসংখ্যার দিক থেকে যা কানাডার তুলনায় ৩৫ গুণ বড়। যেদিন ট্রুডো কানাডার হাউজ অব কমন্সে ওই বিস্ফোরক ঘোষণা দেন, সেদিন থেকে দেশটির প্রধান মিত্রদের কাউকেই শক্ত গলায় সহায়তার আশ্বাস নিয়ে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।

নিয়মিত একে অপরের গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করে এমন দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড ও কানাডা। এসব দেশ কানাডার অন্যতম প্রধান মিত্র। এই জোটকে একসঙ্গে ফাইভ আইস ইন্টেলিজেন্স অ্যালায়েন্স বলা হয়।

ভারতের বিরুদ্ধে ট্রুডোর অভিযোগের পর এই দেশগুলো অনেকটা দায়সারা গোছের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে। কেউই ট্রুডোর পাশে শক্ত অবস্থান নিয়ে দাঁড়াননি।

অস্ট্রেলিয়ার বলেছে, তারা অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অস্ট্রেলিয়ার মতোই অনেকটা একই ধরণের শব্দ বেছে নিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি বলেন, তার দেশ কানাডা যা বলছে তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।

সবচেয়ে নীরব প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই দুটি দেশ ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও যুক্তরাষ্ট্র কানাডার পক্ষে ক্ষোভ দেখিয়ে কথা বলেনি।

 

চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন ভারতের প্রসঙ্গ টানেন তখন তিনি ভারতের প্রতি নিন্দা জানাননি। এর পরিবর্তে তিনি  নতুন অর্থনৈতিক পথ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করার জন্য ভারতের প্রশংসা করেন।

কানাডার টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কানাডায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড কোহেন নিশ্চিত করে বলেছেন, ফাইভ আইসভুক্ত দেশগুলো এ বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান করেছে।

এই মিত্র দেশগুলোই জনসমক্ষে হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাতে কানাডার আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করেছে উল্লেখ করে যে প্রতিবেদন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি বলেন, গোপন কূটনৈতিক আলোচনার বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে চান না।

নির্দলীয় একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাঙ্গাস রিড ইন্সটিটিউটের প্রেসিডেন্ট শাচি কার্ল বলেন, গত আট বছরের মধ্যে তার জনসমর্থন এতোটা কমেনি। তাকে নানা ধরণের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।

গ্লোব এন্ড মেইল নিউজ পেপারের প্রধান রাজনৈতিক লেখক ক্যাম্পবেল ক্লার্ক বলেন,  তিনি একজন সেলিব্রেটি যা আমরা কানাডার রাজনীতিতে কখনো দেখিনি। আর নির্বাচনে জয়লাভের পর তার জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে। কিন্তু আট বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় থাকার পর মনে হচ্ছে কানাডিয়ানদের সাধ মিটেছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.