মাহসা আমিনির মৃত্যু: ইরানে হিজাব পুড়িয়ে বিক্ষোভ, নিহত ৩১ জন
গণহারে বিক্ষোভকারী এবং সমাজকর্মী গ্রেপ্তার
পুলিশি হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যু ঘিরে চলা হিংসাত্মক বিক্ষোভ অব্যাহত ইরানে।
বিক্ষোভকারীদের ওপর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর তাণ্ডবে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।
নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে এক সংবাদ সম্মেলনে রাইসি বলেন, বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না। মাহসা আমিনির মৃত্যু ঘিরে তিনি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।
ইরানের প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, ইরানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে, কিন্তু বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না। ২০১৯ সালের পর দেশটিতে তুমুল বিক্ষোভ চলছে।
এবারের বিক্ষোভে দেশটির নারীরা প্রথম সারিতে আছেন। তাঁরা হিজাব নাড়ছেন এবং তা পুড়িয়ে ফেলছেন। দেশটির ধর্মীয় নেতাদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অনেকে প্রকাশ্যে নিজের চুল কাটছেন।
মাহসা আমিনির বাবা আমজাদ আমিনি বলেছেন, চিকিৎসকরা মাহসার মৃত্যুর পর তাঁকে আর দেখতে দেয়নি। ইরানের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, মাহসা হৃদরোগে আক্রান্ত হন এরপর কোমায় চলে গিয়ে মারা যান। কিন্তু মাহসার পরিবার বলছে, তার আগে কোনও সমস্যা ছিল না, স্বাস্থ্যও ভাল ছিল।
ইরানের মানবাধিকার সংস্থার (আইএইচআর) পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোঘাদ্দাম এক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা আদায়ে রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু ইরান সরকার বুলেট দিয়ে তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমন করছে।
শুক্রবার পুলিশের হেফাজতে মারা যান মাহসা। এরপর টানা আট দিনের মতো চলছে দেশটিতে বিক্ষোভ। বিক্ষোভ দমাতে দেশটির কর্তৃপক্ষ সামাজিম যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রাম পরিষেবাও বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া ইরানজুড়ে উল্লেখযোগ্য ইন্টারনেট পরিষেবাও বিপর্যয় ঘটেছে। দেশটির লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন অফলাইনে।
ইরানের ৩০টির বেশি শহরে এবং অন্যান্য নগর কেন্দ্রেও বিক্ষোভ চলছে। দেশটির নিরাপত্তাবাহিনী গণহারে বিক্ষোভকারীদের এবং সমাজকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে।