মানবাধিকার লংঘন বিষয়ক বেজিং-বিরোধী প্রস্তাবে ভোট দিল না ভারত
ভারত মনে করে কোন নির্দিষ্ট দেশের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা আদৌ কোনও কাজের নয়
অভিযোগ বহু বছরের। উত্তর-পশ্চিম চিনের শিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়ের অন্তত ১০ লক্ষ মানুষকে অবৈধ ভাবে আটকে রেখে তাঁদের উপরে নিয়মিত অত্যাচার করা হয় বলে গত কয়েক বছর ধরেই অভিযোগ উঠেছে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে।
বিষয়টি নিয়ে এর আগে বহু বার আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোচনাও হয়েছে। এ বার চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিতর্কসভার আয়োজন করতে চাইছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত কাউন্সিল। সে জন্য একটি খসড়া প্রস্তাব এনে সদস্য দেশগুলির মধ্যে ভোটের ব্যবস্থা করা হয়। গত কাল সেই ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে ভারত, যা কূটনৈতিক দিক থেকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
কানাডা, ব্রিটেন, আমেরিকা, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, নরওয়ে এবং সুইডেন ওই খসড়া প্রস্তাবটি তৈরি করেছিল। যাতে সায় দিয়েছিল তুরস্কের মতো কয়েকটি দেশ। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিলের মোট ৪৭টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৭টি সদস্য দেশ ওই প্রস্তাবে সায় দিলেও ভেটো দেয় ১৯টি দেশ। যাদের মধ্যে চিন অন্যতম। ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছিল ১১টি দেশ। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ভারত, ব্রাজ়িল, মেক্সিকো এবং ইউক্রেন।
বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সব ধরনের মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে ভারত মনে করে কোনও নির্দিষ্ট দেশের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা আদৌ কোনও কাজের নয়। এর জন্য চাই নিরন্তর সদর্থক আলোচনা। শিনজিয়াংয়ের উইঘুর স্বশাসিত অঞ্চলে মানবাধিকার যাতে লঙ্ঘিত না হয়, তা দেখা উচিত। আমরা আশা রাখি, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে’।
রাষ্ট্রপুঞ্জে খসড়া প্রস্তাবটি খারিজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে নিজেদের জয় হিসেবেই দেখছেন চিনের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভাগের প্রধান সোফি রিচার্ডসন। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাই কমিশনার মিশেল ব্যাশেলে সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘মানবাধিকারের প্রতি চিনের অপরাধের চিহ্ন কিছুতেই মোছা যাবে না’।