অধিকার-মর্যাদা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা চেয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করা মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে চিঠি দিয়েছেন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে রোহিঙ্গাদের পক্ষে ‘আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’র (এআরএসপিএইচআর) চেয়ারম্যান মুহাম্মদ জুবায়ের স্বাক্ষরিত চিঠিটি গ্রহণ করেছেন সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দল।
সকাল ৯টার দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়াসহ একটি প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে যান।
চিঠিতে বলা হয়, আমরা রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের আদিবাসী জাতি। বর্তমানে, আমরা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছি। আমাদের নিজস্ব জন্মভূমি থাকলেও অন্য দেশে স্থানান্তরিত হয়ে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে এখানে আশ্রয়ে আছি। আমরা (আমাদের পূর্বপুরুষ) এবং অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী যৌথভাবে মিয়ানমারের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছি। নু-অ্যাটলি চুক্তি যা ১ অক্টোবর ১৯৪৭ লন্ডনে গাওয়া বা লেখা হয়, আর্টিকেল নম্বর-৩ অনুসারে, আমরা রাষ্ট্রহীন নই। অথচ মিয়ানমার সরকার এখনো অস্বীকার করছে যে, আমরা মিয়ানমারের জাতি নই। তারা সংসদের রেজিস্টার থেকে আমাদের জাতীয়তা বাতিল করেছে। মিয়ানমার সরকার ও কিছু বৌদ্ধ রাজনীতিবিদ একতরফা খেলা খেলছে। বিশ্ব নীরব থেকে আমাদের খেলা দেখছে কিন্তু ইউনাইটেড তা নয়।
তাই আমরা আশা করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পাশে থাকবে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করবে। আমরা রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা, মর্যাদা ও জবাবদিহিতা, মানবাধিকার নিয়ে আমাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। তাই, আমরা মিয়ানমারের সামরিক পরিষদের পাশাপাশি ন্যাশনাল ইউনিয়ন গভমেন্ট-এর ওপর আরও চাপ সৃষ্টির জন্য অনুরোধ করছি। অনুগ্রহ করে রোহিঙ্গাদের অধিকার, নিরাপত্তা, মর্যাদা ও জবাবদিহিতা পূরণের চেষ্টা করুন।
এছাড়াও প্রতিনিধি দলের কাছে রোহিঙ্গারা তাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের নির্যাতন ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থী আরোপিত বিভিন্ন বিধি নিষেধের বর্ণনা করেন।
রোহিঙ্গা জানান, প্রতিনিধিরা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে রোহিঙ্গাদের মতামত জানতে চেয়েছেন। ক্যাম্পে আশ্রিত জীবনকে বন্দী জীবন হিসেবে দেখছেন রোহিঙ্গারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান। এজন্য মিয়ানমারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহল যেন চাপ প্রয়োগ করে; এ নিয়ে প্রতিনিধিদের কাছে অনুরোধ করা হয়।
রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ আমিন বলেন, ক্যাম্পের পরিস্থিতি আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের জানিয়েছি, আমরা মর্যাদা নিয়েই দ্রুত দেশে ফিরতে চায়।
এআরএসপিএইচআর চেয়ারম্যান ডাক্তার জুবায়ের বলেন, ক্যাম্পে সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে একটা চিঠি দিয়েছি। চিঠিটি আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে।