সরকারি চাকরিতে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের জেরে মাঝরাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে হল থেকে বের হয়ে আসেন। স্লোগানে স্লোগানে উত্তাপ ছড়ান তারা। এ সময় তারা ‘তুমি কে আমি কে- রাজাকার রাজাকার’, ‘এই বাংলার মাটি- রাজাকারের ঘাঁটি’- এরকম বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
ঘটনার সূত্রপাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাস থেকে। ‘রাজাকারের নাতিরা সব পাবে, মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না’— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কোটাবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। এ অসন্তোষের আগুনে ঘি ঢালে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের ওপর হামলার ঘটনা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলগেটে আটকে রাখা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হন আসিফ মাহমুদ। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে হল থেকে দলে দলে বেরিয়ে আসতে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তপ্ত এ পরিস্থিতির ঢেউ লাগে দেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে একে একে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস ও রাজপথে জড়ো হন। কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে বিভিন্ন ক্যাম্পাস।
এদিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের চার নেতা পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের গণ যোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক মাছুম শাহরিয়ার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা উপ সম্পাদক রাতুল আহমেদ শ্রাবণ এবং কবি জসীমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের দুই নেতা রাসেল হোসেন ও রাফিউল ইসলাম রাফি।