প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে আবার সুর চড়ালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২০ জানুয়ারি তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন। পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে হামাসকে নিজের শপথগ্রহণের তারিখ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিলেন ট্রাম্প। তিনি জানান, ২০ জানুয়ারির মধ্যে হামাস যদি আমেরিকার বাসিন্দাদের মুক্তি দিতে ব্যর্থ হয়, তবে পশ্চিম এশিয়ায় ‘ধ্বংসলীলা’ চলবে।
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্পকে পণবন্দিদের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়। সেই প্রশ্নের উত্তরেই ট্রাম্প হামাসকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি দায়িত্ব (আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে) নেওয়ার মধ্যে যদি তাঁরা (হামাসের হাতে বন্দি আমেরিকার নাগগিক) ফিরে না আসেন, তবে পশ্চিম এশিয়ায় ধ্বংসলীলা চলবে। যা হামাসের জন্য তো বটেই, কারও জন্যই ভাল হবে না।’’ অর্থাৎ, হামাসের সঙ্গে সম্মুখসমরে নামতে পারে আমেরিকার সেনাবাহিনী। বিভিন্ন দিক থেকে হামাসকে আক্রমণ করা হতে পারে, এমন ইঙ্গিত দিলেন আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজ়রায়েলের একটি শহরে হামলা চালিয়েছিল হামাস। এই হামলার জেরে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ১১০০ জনের। ২৫০ জন ইজ়রায়েলি নাগরিককে যুদ্ধবন্দিও করেছিল হামাস। শুধু ইজ়রায়েলি নাগরিক নন, হামাসের হাতে বন্দি আমেরিকার অনেক বাসিন্দাও। পণবন্দিদের মধ্যে অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই আবহে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিকে যুদ্ধ ঘোষণার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন অনেকে। ট্রাম্পের দাবি, আমেরিকার বাসিন্দাদের বন্দি করে ঠিক কাজ করেনি হামাস।
জো বাইডেনের জমানায় হামাসের কবল থেকে আমেরিকার বাসিন্দাদের মুক্তির জন্য কয়েক মাস ধরে চেষ্টা চলছে। বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপও করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেঁকে বসে হামাস। প্রস্তাবিত ব্যবস্থায় রাজি হয়নি ইজ়রায়েলও। ফলে আলোচনা ব্যর্থ হয়।
ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধে আমেরিকা বার বারই বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে সব রকম সাহায্য করেছে। তবে প্রকাশ্যে প্রথম থেকেই যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগী হয়েছে বাইডেন প্রশাসন। পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফেরাতে আমেরিকার মধ্যস্থতায় ইজ়রায়েল সরকার এবং হামাসের প্রতিনিধিদের বৈঠকও হয়েছে। সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণাও হয়। তবে পরে আবার দেখা গিয়েছে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে। প্রায় ১৫ মাস কেটে গেলেও এখনও যুদ্ধ থামেনি।