দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহের দুই তৃতীয়াংশ আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের সাতটি দেশের পাঁচটি থেকেই রেমিট্যান্স-প্রবাহ কমে গেছে। সাধারণত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দেশে থাকা আত্মীয়-পরিজনের কাছে একটু বেশি পরিমাণ অর্থ পাঠান প্রবাসীরা।
কিন্তু ব্যতিক্রম দেখা গেল গত মার্চে। চিরাচরিত প্রথা ভেঙে এবারই ঈদুল ফিতর সামনে রেখে কম রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারিতে যেখানে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১৬ কোটি মার্কিন ডলার, সেখানে মার্চে এসেছে ১৯৯ কোটি ডলার। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে প্রায় ৮ শতাংশ কম রেমিট্যান্স এসেছে।
দেশভিত্তিক রেমিট্যান্স-প্রবাহের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে বিশ্বের ১৮টি দেশ থেকে। কিন্তু গত মাসে এসব দেশের বেশির ভাগ থেকেই রেমিট্যান্স কম এসেছে। এর মধ্যে আরব আমিরাত থেকে গত ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল প্রায় ৪৮ কোটি ডলার, যেখানে মার্চে এসেছে সাড়ে ৩৬ কোটি ডলার। সৌদি আরব থেকে ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮ কোটি ২৬ লাখ ডলার, যেখানে মার্চে এসেছে ১৭ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। এভাবে যুক্তরাজ্য, যক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, কাতার, সিংগাপুর, ফ্রান্স, জর্দান, স্পেন, জার্মানি, জাপান, ব্রুনাই ও ইরাক থেকে ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে রেমিট্যান্স-প্রবাহ কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে,
আশঙ্কার বিষয় হলো, মধ্যপ্রাচ্য থেকে অব্যাহতভাবে রেমিট্যান্স-প্রবাহ কমে যাওয়া। কেননা, মধ্যপ্রাচ্য থেকেই দেশের দুই-তৃতীয়াংশ রেমিট্যান্স আসে। এখান থেকে কমে যাওয়ার অর্থ হলো সামগ্রিকভাবেই কমে যাওয়া। এ কারণে, গত ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে রেমিট্যান্স-প্রবাহ কমে গেছে প্রায় ৮ শতাংশ। এ দিকে বৈদেশিক মুদ্রার আন্তঃপ্রবাহের তুলনায় বহিঃপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রতি মাসেই কমে যাচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এ রিজার্ভ একটি নির্ধারিত সীমার মধ্যে ধরে রাখার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানাভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সর্বশেষ বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার ধার করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় এক বিলিয়ন ডলার ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে রেখেছে। এর পরও আইএমএফ-এর শর্ত অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ করতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক।