The news is by your side.

ভারত মহাসাগর:  সুরক্ষা নিয়ে সতর্ক শ্রীলঙ্কা

0 118

 

জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করল শ্রীলঙ্কা। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নিরাপত্তাবৃদ্ধির দিকে নজর দিতে চাইছে দ্বীপরাষ্ট্রটি।

কয়েক বছর ধরেই ভারত মহাসাগর অঞ্চল কূটনৈতিক মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসাবে উঠে এসেছে। এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে কার্যত সম্মুখসমরে নেমেছে আমেরিকা এবং চিন।

ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে পশ্চিমি দুনিয়ার সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে রাশিয়ার। রাশিয়া যাতে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নাক না গলাতে পারে, সে দিকেও নজর রাখছে পশ্চিমি শক্তি।

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একাধিপত্য কমানোর লক্ষ্যে পাশাপাশি এসেছে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ভারত। তৈরি হয়েছে চতুর্দেশীয় ‘কোয়াড’ গোষ্ঠী।

এই আবহে শনিবার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে জানিয়েছেন, ভারত মহাসাগরের এই ‘লড়াইয়ে’ নিরপেক্ষ অবস্থান নেবে শ্রীলঙ্কা। দ্বীপরাষ্ট্রটি কেবল নিজেদের নিরাপত্তা এবং উন্নতির দিকেই মন দেবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

শনিবার শ্রীলঙ্কার দক্ষিণের জেলা গল-এ নৌসেনার আধিকারিকদের সামনে বক্তৃতা করছিলেন বিক্রমসিঙ্ঘে। সেখানেই তিনি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কৌশল বদলের কথা জানান।

বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এবং জলবায়ু পরিস্থিতির নিরিখে এই নিরাপত্তা সংক্রান্ত কৌশল পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন বলে জানান বিক্রমসিঙ্ঘে।

বিক্রমসিঙ্ঘের কথায় উঠে আসে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে চিন এবং আমেরিকার টানাপড়েনের বিষয়টিও। তবে ছোট দ্বীপরাষ্ট্র হলেও এই মহাসাগরে যে শ্রীলঙ্কার গুরুত্ব অপরিসীম তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

বিক্রমসিঙ্ঘে বলেন, “আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারত মহাসাগর বড় ভূমিকা পালন করে। আর দ্বীপরাষ্ট্র হিসাবে এই সাগরে বড় ভূমিকা রয়েছে আমাদেরও।”

ভারত মহাসাগর দিয়ে ঘেরা শ্রীলঙ্কার সমসাময়িক নিরাপত্তা কৌশল ঠিক করতে এক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেলের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করেছে শ্রীলঙ্কা। এই টিম রিপোর্ট দেবে শ্রীলঙ্কার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাকে।

পরিবর্তিত ভারত মহাসাগরের কথা বলতে গিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট জানান, ক্রমশ ডুবোজাহাজ এবং নজরদার জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে।

অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সঙ্কটে ভোগা শ্রীলঙ্কার উপরে চিনের প্রভাবের কথা সুবিদিত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের মতো শ্রীলঙ্কাও চিনের ঋণের ফাঁদে আটকে পড়েছেন বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

গত বছরই শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে ভিড়েছিল চিনা গুপ্তচর জাহাজ ‘উয়ান ওয়াং-৫’। এই নিয়ে কলম্বোকে সতর্ক করেছিল নয়াদিল্লি।

ওই গুপ্তচর জাহাজ ৭৫০ কিলোমিটারের মধ্যে পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র বিষয়ক গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করতে পারে বলে জানা গিয়েছিল। সে সময় তামিলনাডুর কালপক্কম, কুডানকুলাম-সহ বিভিন্ন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের উপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে ওই জাহাজ শ্রীলঙ্কা উপকূল থেকে এসেছিল বলে মনে করেছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

শ্রীলঙ্কার এই নিরপেক্ষ অবস্থান ঘোষণার নেপথ্যে চিনের হাতযশ দেখছেন কেউ কেউ। তাঁদের ধারণা, আপাত নিরপেক্ষতার কথা বলে আদতে ভারত মহাসাগরে চিনের একাধিপত্যকেই সুনিশ্চিত করতে চাইছে শ্রীলঙ্কা।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.