রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশন চলার ফাঁকে চিন নিয়ে সরব হলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর বক্তব্য, গত তিন বছরে বেজিংয়ের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সামরিক উত্তেজনা চলছে। ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে তিনি ‘অত্যন্ত অস্বাভাবিক’ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন। ভারতে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টারের নেতৃত্বে কাউন্সিল ফর ফরেন রিলেশন এর একটি আলোচনাচক্রে ওই মন্তব্যগুলি করেছেন বিদেশমন্ত্রী।
জয়শঙ্করের কথায়,আপনারা যদি গত তিন বছরের দিকে নজর রাখেন, তা হলে দেখবেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। পারস্পরিক সফর বন্ধ। উচ্চপর্যায়ের সামরিক উত্তেজনা চলছে। কিছুটা শ্লেষের সুরে তিনি বলেন, চিনের সঙ্গে কূটনীতির একটা মজা রয়েছে। কখনই তারা খোলসা করে বলবে না যে কেন তারা এসব করছে! তাঁর এই মন্তব্যে হাসির রোল ওঠে দর্শকদের মধ্যে।
নয়াদিল্লি-বেজিং সম্পর্কের ওঠাপড়া নিয়েও মুখ খুলেছেন জয়শঙ্কর। তাঁর বক্তব্য, এক এক সময়ে চিন আমাদের এক এক রকম ব্যাখ্যা দিয়েছে। কিন্তু কোনওটাই ধোপে টেকেনি। বাষট্টিতে ভারত-চিন যুদ্ধের পরে আমাদের দেশে চিন সম্পর্কে ধারণা ধীরে ধীরে কিছুটা শুধরে ছিল। কিন্তু তা আবার ধাক্কা খেয়েছে। চুক্তিভঙ্গ করে বিপুল সংখ্যক সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মজুত করেছে বেজিং। তাঁর মতে, চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কখনই খুব একটা সহজ ছিল না।
কয়েক বছর আগে গলওয়ানে দু দেশের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের সেনার প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর পর সীমান্ত সমস্যা মেটাতে সেনা পর্যায়ে আলোচনায় বসে দু’দেশ। লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান হলেও, কয়েকটি অঞ্চলে রফাসূত্র এখনও অধরা।
শুধু লাদাখ নয়, অরুণাচল প্রদেশেও চিনা আগ্রাসনের ঘটনা ঘটেছে। কয়েক দিন আগে বেজিংয়ের তরফে একটি মানচিত্র প্রকাশ করা হয়েছিল। যেখানে অরুণাচলকে চিনের অংশ বলে দাবি করা হয়। এর বিরুদ্ধে সরব হয় নয়াদিল্লি। এর পরেই সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে কোনও কারণ না দেখিয়েই না-আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।