শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যায় ভারতীয়ের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের দেশটির হাইকমিশনার বলেছেন, তদন্ত কমিটিকে সিদ্ধান্তে আসতে দিন। আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে মূল্যবোধ ও স্বার্থ ভাগ করি।’
বৃহস্পতিবার লন্ডনে ইন্দো-প্যাসিফিক কনফারেন্স শেষে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানের সরকারের করার মতো অনেক কিছুই আছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে, ফলাফল আসতে দিন।’
কানাডার অভিযোগটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে দোরাইস্বামী বলেন, ‘এটি একটি অভিযোগ মাত্র। এটি যতটা উদ্বেগের তার চেয়ে বেশি কিছু না। যাইহোক, এটি ভারত-কানাডা সম্পর্কের বিষয় নয়, ইন্দো-প্যাসিফিক প্রসঙ্গ।’
ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অংশীদারিত্বের নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেককে তাদের নিজস্ব ইতিহাসের মূল্যায়ন করতে হবে। আমি মনে করি অংশীদারিত্বগুলো আগ্রহ ও মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে। আমরা এই ব্যাপারগুলো সকল অংশীদারের সঙ্গে মেনে চলি।’
যুক্তরাজ্যে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার স্টিফেন স্মিথ বলেছেন, যতদূর ভারত উদ্বিগ্ন, অস্ট্রেলিয়া ভারতের সঙ্গে একটি দীর্ঘস্থায়ী ইতিহাস, ঐতিহ্যও দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করেছে। সুতরাং আমরা উভয়ই গণতান্ত্রিক দেশ, আমরা উভয়ই আইনের শাসনকে সম্মান করি, আমরা উভয়ই চুক্তির আইনকে সম্মান করি এবং আমরা একে অপরের সঙ্গে সাবধানে ও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করি।’
দোরাইস্বামীর সঙ্গে একমত হয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমাদের উচিত তদন্তের ফলাফল সামনে আসার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া।’
জুনের শুরুতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যায় ভারত সরকারের এজেন্টদের জড়িত থাকার অভিযোগ করেছিলেন। তবে ভারত এই অভিযোগগুলো অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং কানাডার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে টিট-ফর-ট্যাট পদক্ষেপে কানাডিয়ান কূটনীতিককে বহিষ্কারও করেছে।
বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, কানাডা ধারাবাহিকভাবে ভারত-বিরোধী চরমপন্থীদের প্রশ্রয় দিয়েছে। ভারত আশা করে, কানাডিয়ান সরকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে তার দায়বদ্ধতা পালন করবে। নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কানাডিয়ান কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ দেখেছে দিল্লি যা অগ্রহণযোগ্য।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘কানাডার উদ্বেগ নিয়ে আমরা বলেছি, তারা ধারাবাহিকভাবে ভারত-বিরোধী চরমপন্থীদের স্থান দিয়েছে এবং এটিই ইস্যুর কেন্দ্রবিন্দু। কানাডায় আমাদের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা এর ভুক্তভোগী। তাই, আমরা আশা করি কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে কানাডা সরকার তার বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে। আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কানাডিয়ান কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপও দেখেছি এবং এটি অগ্রহণযোগ্য।
বুধবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারত সরকারকে হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার তদন্তে কানাডাকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন বলে সিবিসি নিউজ জানিয়েছে।
সপ্তাহের শুরুতে কানাডায় ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার ভার্মা বলেছিলেন, হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার বিষয়ে ভারত শুধু নির্দিষ্ট ও প্রাসঙ্গিক প্রমাণ চাইছে যাতে আমরা কানাডাকে তদন্তের উপসংহারে পৌঁছাতে সহায়তা করতে পারি।