সম্প্রতি কানাডার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের চরম অবনতি হয়েছে ভারতের। মূলত কানাডায় বসবাসকারী খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যা নিয়ে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত বলে অভিযোগ কানাডার। তবে ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এরই মধ্যে এই উত্তেজনা ব্যাপক প্রভাব ফেলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে। পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা হিসেবে উভয় দেশ কূটনীতিক বহিষ্কার করেছে। কানাডার নাগরিকদের জন্য ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। কানাডাও নিজ নাগরিকদের জন্য ভারতে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে। স্থগিত করেছে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা। সবশেষ পদক্ষেপ হিসেবে আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে আরো ৪১ কূটনীতিক সরিয়ে নিতে কানাডাকে নির্দেশ দিয়েছে ভারত।
এদিকে, এই পরিস্থিতিতে আলোচনায় উঠে এসেছে কানাডার ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রসঙ্গ। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, খালিস্তানি ইস্যুকে কেন্দ্র ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দিতে পারে আমেরিকা।
নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটি এমন আভাস দিয়েছেন বলে ওয়াশিংটন-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘পলিটিকো’ এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত নয়াদিল্লিতে তার সহকর্মীদের বলেছেন- ওয়াশিংটন নয়াদিল্লির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দিতে পারে এবং সে ঘটনা ‘নিকট ভবিষ্যতেই’ ঘটবে।
এমন সময় ওই মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ বললেন যখন হোয়াইট হাউজ গত মঙ্গলবার বলেছিল, নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারতের জড়িত থাকার যে অভিযোগ কানাডা করেছে তা ‘গুরুতর’ এবং তা খতিয়ে দেখা দরকার। অবশ্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ নিশ্চয়তা দিয়েছেন, দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্ক আগের মতোই শক্তিশালী থাকবে। তিনি বলেন, “আমাদের সম্পর্ক এখন সর্বকালের সর্বচূড়ায় অবস্থান করছে।”
এদিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত গারসেটির বরাত দিয়ে পলিটিকো যে খবর দিয়েছে তা অস্বীকার করেছে নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাস।
দূতাবাসের একজন মুখপাত্রের কাছে ওই রিপোর্টের সত্যতা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “মার্কিন দূতাবাস এ ধরনের রিপোর্ট অস্বীকার করছে। রাষ্ট্রদূত গারসেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার গভীর সম্পর্ককে আরো জোরদার করার জন্য নিরসল কাজ করে যাচ্ছেন।”
উল্লেখ্য, গত জুন মাসে কানাডায় বসবাসরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৪৫ বছর বয়সি খালিস্তানি নেতা হরদিপ সিং নিজ্জর আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। কানাডা সরকার দাবি করেছে, ভারত সরকার তার এজেন্টদের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এরপরই মূলত দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক চরমভাবে অবনতি হতে থাকে।