ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রয়োজন ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে গালফ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেছেন, নাগরিকত্ব আইন সংশোধন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও এর কোনো প্রয়োজন ছিল না।
তিনি বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে ভারত সরকারের উদ্দেশ্য কী, তা বুঝতে পারছি না। কেন ভারত সরকার এটা করল। এটার প্রয়োজন ছিল না।
তিনি আরও বলেন, তারপরও এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ সব সময়ই সিএএ এবং এনআরসিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মনে করে আসছে।
নাগরিকত্ব আইন (সিএএন) সংশোধন করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দুসহ কয়েকটি ধর্মাবলম্বীদের ভারত তাদের দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।বিতর্কিত এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দেশজুড়ে সরব হয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল। এছাড়া এই নিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চলছে দফায় দফায় বিক্ষোভ। এছাড়া জাতীয় নাগরিক তালিকারও বিরোধিতা করছে সাধারণ মানুষ।
ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে পাড়ি দেওয়া কেউ বাংলাদেশে ফিরে এসেছে এমন নজির নেই। কিন্তু ভারতে নাগরিকরা এই আইন সংশোধন হওয়ার কারণে অনেকে সমস্যার মধ্যে রয়েছে।
এছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন , মিয়ানমার থেকেই রোহিঙ্গা সংকটের শুরু। তাদের কাছেই এর সমাধান রয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি। এখন পর্যন্ত দুবার প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও কোনও রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় সেখানে যেতে চায়নি। ফলে আমাদের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। মিয়ানমার আসলে প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই সমস্যা থাকলে আমাদের দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে। এসময় রোহিঙ্গাদের প্রত্যবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার মতে, যেকোনো বৃহত্তর ক্ষেত্র বিবেচনায় বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সর্বোচ্চ সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে।
বাংলাদেশ কয়লা বিদ্যুতের দিকে মনোযোগ বাড়ালেও এক্ষেত্রে পরিবেশের সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে সাক্ষাতকারে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশ এতদিন গ্যাসের উপর নির্ভর করত। কিন্তু গ্যাস ফুরিয়ে আসায় উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে এখন কয়লাসহ অন্য উৎসের দিকে নজর দিতে হচ্ছে।
বিশাল জনসংখ্যার দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর চাপ বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরেই সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কীভাবে উন্নয়ন করে যাচ্ছেন, তাও গালফ নিউজকে তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।