উন্নয়নের উল্টো পথে হাঁটছে ভারতের অর্থনীতি -মন্তব্য করেছেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ ব্যানার্জি। সোমবার নোবেল জেতার পর যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে অনুষ্ঠিত একটি সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় অর্থনীতি সম্পর্কে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে গিয়ে অভিজিৎ বলেন, ‘আমার মতে ভারতীয় অর্থনীতি খুবই খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’ এসময় তাকে ভারতের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে নিজস্ব মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। আর আমি আমার বক্তব্যে ভবিষ্যতের অবস্থা জানাচ্ছি না, বরং এখন কি চলছে তা বলছি।’
প্রতি দেড় বছর অন্তর অন্তর যে জাতীয় অর্থনৈতিক সমীক্ষা প্রকাশিত হয়, তার উপর ভিত্তি করে নিজের বক্তব্যের পক্ষে কিছু যুক্তি তুলে ধরেন ভারতীয় এই অর্থনীতিবিদ। এসময় তিনি বলেন, ২০১৪-১৫ ও ২০১৭-১৮ এর ভারতের জাতীয় অর্থনৈতিক সমীক্ষার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে আমরা দেখতে পাচ্ছি, শহর ও গ্রামাঞ্চলগুলোতে মানুষের গড় ক্রয়ক্ষমতা খুব দ্রুত হারে হ্রাস পাচ্ছে। অনেক অনেক বছর পরে ভারত এই প্রথম এমন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে এবং এটা খুবই চিন্তার বিষয়।’
এছাড়াও বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী জরিপগুলোর অসামঞ্জস্যতার কথা উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন অভিজিৎ ব্যানার্জি। তিনি বলেন, ‘ভারতে জরিপগুলোর মধ্যে এক অসুস্থ প্রতিযোগীতা বিরাজ করছে। কোনটা সঠিক আর কোনটা যে বেঠিক তা ঠাহর করাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। তারপরও আমার মনে হয়, সরকার বেশ ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পারছে যে, কিছু একটা সমস্যা আছে। অর্থনীতির চাকা খুব দ্রুত তার গতি হারাচ্ছে। যেহেতু আমাদের জরিপগুলো বিতর্কিত, তাই কত দ্রুত তা আমরা জানি না। কিন্তু আমি মনে করি খুব দ্রুত আমাদের অর্থনীতি গতি হারাচ্ছে।’
অর্থনীতির এই খারাপ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় সম্পর্কে অভিজিৎ জানান, আসলে এ ব্যাপারে কি করা উচিত তা তিনি জানেন না। তিনি বলেন, ভারতীয় সরকারে বেশ কিছু ঘাটতি রয়েছে। তবে এই মূহুর্তে তাদের উচিত সবাইকে শান্ত রাখার জন্য বাজেট ও মুদ্রা ব্যবস্থায় নতুন কিছু উদ্যোগ হাতে নেয়া।
অর্থনীতির উল্টো রথযাত্রার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ‘এটা এমন একটা অবস্থা যখন আপনি আর পকেটে টাকা কত আছে তা নিয়ে চিন্তা করেন না, বরং তার চেয়ে বেশি চিন্তা করেন কতটুকু কিনতে পারবেন। আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, চাহিদা এই মূহুর্তে ভারতীয় অর্থনীতির সবচেয়ে বড় সমস্যা।’