ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমার দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহককে কোনো ধরনের প্রশ্ন না করা জন্য নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্যাংকার্স সভায় ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশনা দেন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।
সভা শেষে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নবনিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চার ডেপুটি গভর্নর এবং ব্যাংকগুলোর এমডিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক ব্রিফ করেন।
সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, সভায় গভর্নর কিছু ইতিবাচক খবর দিয়েছেন। বাণিজ্য ঘাটতি অনেক কমেছে। মাস দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি আরও সহনীয় হবে। তারল্য নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অনেক কথা হচ্ছে। প্রথম দিকে টাকা উত্তোলন কিছু বাড়লেও এখন আবার জমার হার বাড়তে শুরু করেছে। এ নিয়ে কোনো অস্থিতিশীলতা নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, সম্প্রতি ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গেলে আমানতকারীদের ব্যাংকাররা বিভিন্ন প্রশ্ন করে টাকার উৎস জানতে চান। এতে গ্রাহকরা টাকা জমা দিতে গিয়ে জবাবদিহিতার মুখে পড়ে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তাই এখন থেকে অন্তত ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা দিতে যাওয়া কোনো গ্রাহককে অতিরিক্ত প্রশ্নের মুখোমুখি না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হুন্ডি বন্ধ করার জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মাধ্যমে যাতে কোনো টাকা পাচার না হয় সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি অব্যাহত রয়েছে।
মেজবাউল হক সাংবাদিকদের জানান, রমজানে প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে আমদানি যেন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এলসি মার্জিনের শর্ত শিথিল বা অন্য কোনো সহায়তা প্রয়োজন হলে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় ঋণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চলতি অর্থবছর ব্যাংকগুলোর জন্য ৩৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। প্রতিটি ব্যাংককে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার আলোকে ঋণ বিতরণ করতে বলা হয়েছে। কোনো ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারলে অনর্জিত অংশ অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
ইসলামী ব্যাংকের সমসাময়িক ঋণ অনিয়মের বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের একটি অন্যতম বৃহত্তম ব্যাংক। এখানে গ্রাহকদের আমানতের পূর্ণ নিশ্চয়তা রয়েছে। সেখানে কোনো দুর্নীতি হয়েছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ তদন্ত শেষ হলে তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হবে। তবে দেশের ভালো ব্যাংকটি নিয়ে কোনোভাবেই বিভ্রান্ত হওয়া ঠিক হবে না। তিনি বলেন, যে কোনো ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন ও জমা একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। টাকা উত্তোলন হবে, জমা হবে এটাই স্বাভাবিক।