The news is by your side.

বোর্ডের সিদ্ধান্ত উড়িয়ে আবারও ওয়াসার ‘অনলাইন এমডি’ তাকসিম

0 184

 

ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের সিদ্ধান্ত এবার তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান। আবারও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসে অনলাইনে এমডির দায়িত্ব পালনের বন্দোবস্ত করেছেন তিনি নিজেই। গত বুধবার এ বিষয়ে অফিস আদেশও জারি করেছেন তাকসিম এ খান। ওই আদেশে বলা আছে, ছয় সপ্তাহ যুক্তরাষ্ট্রে বসে অনলাইনে তিনি এমডির দায়িত্ব পালন করবেন।

গত ৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর ছুটির আবেদন করেন তাকসিম এ খান। তাতে বলা হয়, নিজের চিকিৎসা এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা পরিবারের সদস্যদের (স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূ) সঙ্গে দেখা করতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া প্রয়োজন। ঢাকা ওয়াসা বোর্ড ১০ আগস্ট থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি অনুমোদন করলেও ওই সময় দাপ্তরিক কাজের কারণে যেতে পারেননি। ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত অথবা যাত্রার তারিখ থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গমনের অনুমতি চান।

আবেদনে তাকসিম এ খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের সময় তিনি ‘অন ডিউটি’তে থাকবেন। এই সময়ে ওয়াসার বিভিন্ন শাখা তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবে। আর সংস্থাটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ কে এম সহিদ উদ্দিন এমডির পক্ষে বিভিন্ন সভায় উপস্থিত থাকবেন। যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের যাবতীয় খরচ তিনি নিজে বহন করবেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন।

২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়া তাকসিম এ খানের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য তিনি প্রায় প্রতিবছরই একটি নির্দিষ্ট সময় সেখানে থাকেন। গত বছরের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই তিন মাস তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। এর আগে তিনি ২০১৯ সালের ১১ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন।

এবার তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্রে বসে ‘ভার্চ্যুয়াল অফিস’ করার আবেদন নাকচ করে দিয়েছিল ঢাকা ওয়াসা বোর্ড। গত ৭ জুলাই বোর্ড সভায় সদস্যরা এমডির অনলাইনে দায়িত্ব পালনের তীব্র বিরোধিতা করেন। পরে তাকে দুই মাসের ছুটি দেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত হয়, এই দুই মাস তিনি পূর্ণ ছুটিতে থাকবেন, ভার্চ্যুয়ালি কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।

ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে তাকসিম এ খানের মন্ত্রণালয়ে ‘অনলাইন ডিউটি’র বিষয়ে চিঠি দেওয়ায় বিস্মিত বোর্ডের সদস্যরাও। এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘উনি কীভাবে এটা করলেন তা তো জানি না। এ ধরনের কোনো অফিস আদেশ আমার জানা নেই। তবে এর আগে বোর্ডে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, অনলাইনে তিনি আর এমডির দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। প্রয়োজনে তাঁকে ছুটি দেওয়া হবে। এ জন্য তাঁর ছুটিও অনুমোদন করা হয়েছিল।’

এ বিষয়ে জানতে তাকসিম এ খানকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা ওয়াসার মুখপাত্র মোস্তফা তারেক বলেন, ‘সরকারের দুটি জিনিস আছে। রুলস অব বিজনেস অ্যান্ড রুলস অব প্রসিডিউর। এটা মেনেই ওয়াসার সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। ফলে এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি বা হচ্ছে না।’

এ ব্যাপারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এরই মধ্যে প্রমাণিত, তাকসিম এ খান ঢাকা ওয়াসায় একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। উনি এতই ক্ষমতাবান ব্যক্তি যে, ওয়াসার তদারককারী মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে তাঁর যাওয়ার সুযোগ নেই। এখন বোর্ডের সিদ্ধান্ত অবজ্ঞা করায় বোর্ড তাঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়, সেটা দেখতে হবে। সেই ব্যবস্থা এমডি মানেন কিনা সেটাও দেখতে হবে। বোর্ড যদি জবাবদিহি নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে বোর্ডের অস্তিত্বই তো প্রশ্নের মুখে পড়বে। এমডিকে নিয়ে তো সমালোচনা কম হয়নি। তারপরও কেন বারবার তাঁকেই এমডি করা হয়। তিনি ছাড়া কি দেশে আর কোনো যোগ্য ব্যক্তি নেই?’

Leave A Reply

Your email address will not be published.