দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত নিয়ে অহেতুক দুশ্চিন্তার দরকার নেই। তবে সতর্ক প্রহরার দরকার রয়েছে। রিজার্ভ বাড়াতে রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয় বাড়ানোর দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন এমন মন্তব্য করেছেন। আজ রোববার রাজধানীর তেঁজগাওয়ের এফডিসির একটি মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. ফরাসউদ্দিন দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর কথা বলেন।
ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘রিজার্ভের মতো অর্থনীতির স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে অন্যায় বিতর্ক হচ্ছে। যারা বলছেন তিন মাসের মধ্যে রিজার্ভ শুকিয়ে যাবে, তারা কি মনে করেন, তিন মাসে কোনো রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্স আসবে না?’
ড. ফরাসউদ্দিন আরও বলেন, ‘রিজার্ভ নিয়ে আমি চিন্তিত, কিন্তু উৎকন্ঠিত নই। সমস্যা মনে করছি, কিন্তু সংকট মনে করছি না।’
সাবেক গভর্নর আরও বলেন, ‘রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রণোদনা না দিয়ে খোলা বাজারের সঙ্গে ব্যাংকে ডলারের পার্থক্য ঘোচাতে পারলে কালোবাজারি বন্ধ হবে। টাকা–ডলার বিনিময় হার একটা থাকতে হবে। কার্ব মার্কেটে বেশি দর পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে প্রবাসীরা সেদিকে আকৃষ্ট হচ্ছে।’
অর্থনীতি ও বিনিয়োগের প্রয়োজনে রাজনৈতিক স্থিতশীলতার গুরুত্ব ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা যদি উঁচু মানের দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দেন, নিজেদের মধ্যে যদি হানাহানি করেন, তাহলে দেশের অসামান্য অর্জন ধরে রাখা কঠিন হবে।’
ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ প্রসঙ্গে ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘বড় অংকের ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করেও অনেকে পার পেয়ে যাচ্ছে। সামান্য ঋণের জন্য কৃষককে জেলে নেওয়া হয়, অথচ অনেকে ১০ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে ফেরত দেন না। তারা সব সরকারের আমলে ডানে–বামে বসে।’
অর্থনৈতিক সুরক্ষায় অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির কৌশল নিয়ে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট নামে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।