তসলিমা নাসরিন
নাম না করেই কবীর সুমনকে আরও একবার বিঁধলেন তসলিমা নাসরিন। শনিবার ফের সামাজিক পাতায় সরব তিনি। সেখানেই নারী-পুরুষের যৌন সক্ষমতা নিয়ে কলম ধরেছেন। তাঁর কটাক্ষ, ‘বেশি-বয়সী পুরুষের যৌনক্ষমতা থাকা গর্বের ব্যাপার, আর বেশি-বয়সী নারীর যৌনক্ষমতা থাকা লজ্জার ব্যাপার!’ অর্থাৎ, এখানেও যে নারী-পুরুষের বৈষম্য বর্তমান, সেদিকেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন তিনি।
কবীর সুমন তাঁর যৌনইচ্ছা, কামনা, বাসনা, প্রেম নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। সদ্য ৭৫-এ পা রেখেছেন তিনি। তার পরেও পৃথিবী যেন তাঁর চোখে রঙিন, তাঁর কামোত্তেজনা জাগে— অকপটে স্বীকার করেন। জানান, তাঁর এখনও যৌনক্ষমতা অটুট! এখানেই ঘোর আপত্তি তসলিমার।
তাঁর পাল্টা দাবি, ‘বিছানায় তিনি ৭৫ বছর বয়সেও সক্ষম, এই কথা কেন শোনাচ্ছেন, পুরুষদের বোকা বানানোর জন্য নাকি নারীদের?’
শনিবার সেই জায়গা থেকেই তাঁর ব্যঙ্গ, ‘একজন অশীতিপর বৃদ্ধও তুড়ি বাজিয়ে বলতে পারেন, ‘আমার যৌনক্ষমতা বেশ আছে, আমি খুবই যৌনসক্ষম।’ একজন অশীতিপর বৃদ্ধা যদি তুড়ি বাজিয়ে বলেন, ‘আমার যৌনক্ষমতা বেশ আছে, আমি খুবই যৌনসক্ষম’, তাহলে ভারতীয় উপমহাদেশের সমাজে কী কাণ্ড হবে ভাবলে গা শিউরে ওঠে।’
পুরুষের বেশি বয়সের যৌনক্ষমতা নিয়ে কেউ ততটা বিস্মিত নন, সে কথাও জানাতে ভোলেননি— ‘লোকে এতে অবাক হয় না। আজকাল অবাক হওয়ার কিছু নেই অবশ্য। যৌনক্ষমতা ফুরিয়ে গেলেও ভায়াগ্রা জাতীয় যৌনউত্তেজক বড়ি পুরুষের যৌনক্ষমতা যে কোনও বয়সেই বাড়িয়ে দিতে পারে।’ আর একজন নারীর যদি একই ক্ষমতা থাকে? তার উদ্দেশ্যে কী বলবে ভারতীয় সমাজ? লেখিকার মতে, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-পড়শি, বন্ধু-বান্ধব সবাই তাঁকে ছিঃছিঃ করবেন। এমনকী তাঁকে একঘরেও করবেন। এরপরেই তাঁর উপলব্ধি, ‘এই বৈষম্য যতদিন টিকে থাকবে ততদিন নারী-স্বাধীনতা দরজা-জানলার জন্য অপেক্ষা করবে না, ঘুলঘুলি পেলেই পালাবে।’