ওষুধ তৈরিতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও টিকার ক্ষেত্রে পিছিয়ে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, যন্ত্র ও সরঞ্জাম এবং কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় এই অবস্থা। অথচ বাংলাদেশে একসময় ভালো মানের টিকা তৈরি হতো। এর মধ্যে সরকারিভাবে তৈরি কলেরা, টাইফয়েড, গুটিবসন্ত, জলাতঙ্ক, টিটেনাস ও ডিপথেরিয়ার টিকা উল্লেখযোগ্য।
এমন পরিস্থিতিতে টিকা তৈরির পূর্বযোগ্যতা অর্জনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) ম্যাচিউরিটি লেভেল-৩ উন্নীতকরণের এবং বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আগামী মার্চে ডাব্লিউএইচওর প্রতিনিধিদল আসবে টিকা তৈরিতে বাংলাদেশের সক্ষমতা যাচাই করতে। তারা সন্তুষ্ট হলে বিশ্বমানের টিকা উৎপাদনে যাবে বাংলাদেশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পূর্বযোগ্যতা বা ম্যাচিউরিটি লেভেল-৩ অর্জন করতে পারলে স্থানীয় কম্পানিগুলো ওষুধের মতো ভ্যাকসিনও বিশ্ববাজারে রপ্তানি করতে পারবে।
একই সঙ্গে নিজেদের প্রয়োজনও মেটাতে পারবে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও দ্রুত নগরায়ণের কারণে বেড়ে যাওয়া সংক্রামক-অসংক্রামক রোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পূর্বযোগ্যতা এমন একটি শর্ত, যার মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, বিশেষ করে টিকা আন্তর্জাতিক বাজারে ঢোকার সুযোগ পায়। এ জন্য বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিকে ডাব্লিউএইচওর কোয়ালিফায়েড হতে হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ‘আমাদের মেডিসিন ল্যাবগুলো ডাব্লিউএইচওর অনুমোদিত, কিন্তু ভ্যাকসিন ল্যাবগুলো অনুমোদিত নয়। ভ্যাকসিন ল্যাবরেটরি সক্ষমতা যদি লেভেল-৩ না হয়, সেটি কিন্তু ডাব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড হবে না। বিদেশে রপ্তানিও করা যাবে না। আমাদের ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) এই টিকা ব্যবহার করতে পারে না। আশার কথা হলো, ডাব্লিউএইচও মহাপরিচালকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।