বিএনপি বা বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বা না করা নয়, বরং অনুকূল পরিবেশ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে চিন্তিত যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন। তিনি ভারত মহাসাগর সম্মেলন উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার তিন দিনের সফরে ঢাকায় এসেছিলেন।
আফরিন আক্তার বলেন, ‘নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে কি হচ্ছে না, সে বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করছি না। আমরা নির্বাচনী পরিবেশে বেশি দৃষ্টি দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, “নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কী করবে না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত মূলত দলের বিষয়। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক কি না, সে বিষয়েও আমরা মন্তব্য করছি না।’
মার্কিন ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ দেশের কোনো বিশেষ দল বা প্রার্থীর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে না বা কারো সঙ্গে তাল মেলাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে নির্বাচনী পরিবেশকে সহযোগিতা করতে কাজ করছি।’
নির্বাচনে বিএনপি বা কোনো বিশেষ দলের অংশ নেওয়া না নেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ আছে কি না জানতে চাইলে মার্কিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র এ দেশের কোনো রাজনৈতিক দল, কোনো প্রার্থী বা কোনো ব্যক্তি বিশেষকে সমর্থন করে না। আমরা আপনাদের (বাংলাদেশের) নির্বাচনেও কোনো ধরনের মধ্যস্থতা করছি না।’
আফরিন আক্তার বলেন, গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রকে সমর্থন করে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, গণতন্ত্রই সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা। তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে নাগরিক সমাজের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ আছে। রাজনৈতিক বিরোধীদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ আছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সুযোগ দেয়।’
মার্কিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আগামী মাসগুলোতে প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তিনি ওই মিশনের সফরের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা জানাতে পারেননি।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র আগামী মাসগুলোতে প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠাতে যাচ্ছে।’
মার্কিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গত মাসে ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখার প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করে। ওই বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছু করছে। তবে এ ক্ষেত্রে অন্যদেরও সাহায্য করতে হবে।
মোমেন বলেন, পর্যবেক্ষক যত খুশি আসুক। তবে তারা কোনোভাবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ও পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারবে না।