আড়াই বছরের শাসনকালে সম্ভবত এ বার বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে মায়ানমারে জুন্টা সরকার। সেনা সরকার-বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি একজোট হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, দেশের অর্ধেকাংশ নাকি এখন ওই গোষ্ঠীগুলির নিয়ন্ত্রণ। পরিস্থিতি যে খুব একটা অনুকূলে নয়, তার ইঙ্গিত মিলেছে জুন্টা সরকারের প্রতিক্রিয়ায়।
সরকারের প্রেসিডেন্ট মিয়ে সুয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এ ভাবে অস্থিরতা তৈরি করা হলে দেশ টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। অশান্তির জেরে প্রতিবেশী দেশগুলিতে পালাচ্ছেন মায়ানমারের বহু নাগরিক।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদ্রোহ ঘটিয়ে মায়ানমারে সামরিক শাসন জারি করেছিল সেনাবাহিনী। দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে নানা প্রান্তে শুরু হয় বিদ্রোহ। সম্প্রতি মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়্যান্স আর্মি, তাঙ্গ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি হাত মিলিয়েছে। এই তিন গোষ্ঠীর জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ হিসেবে পরিচিত।
মায়ানমারের বিভিন্ন প্রান্তে জুন্টা সরকারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ওই গোষ্ঠীর প্রবল সংঘর্ষ চলছে। সাম্প্রতিক কালে তিন গোষ্ঠীর জোটের সঙ্গে সেনাবাহিনীর প্রথম সংঘাত ঘটে গত ২৭ অক্টোবর। লড়াই হয় দেশের উত্তর এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে। দ্বিতীয় সংঘাতের ঘটনাটি ঘটেছে গত ৭ নভেম্বর। সে সংঘর্ষে দক্ষিণ-পূর্বের একটি বড় এলাকা দখল করে নিয়েছে ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’। সম্প্রতি আরাকান আর্মি একটি প্রদেশ দখল করে নিয়েছে।
‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’-এর এই অগ্রগমনে রীতিমতো শঙ্কিত জুন্টা প্রশাসন। পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠতে পারে যদি তিন গোষ্ঠীর জোট মায়ানমারের কেন্দ্রস্থল, বিশেষ করে মান্দালয়ের উত্তরে সংঘর্ষ শুরু করে। প্রশ্ন হল, ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’-এর সাফল্যগুলি কি মায়ানমারের বিরোধীদের বিদ্রোহী বাহিনীতে যোগ দিতে উৎসাহিত করবে কিনা। যদি তাই হয় তা হলে সামরিক সরকারের জন্য একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জুন্টা সরকারের প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছে, এই ভাবে সংঘাত বজায় থাকলে দেশ টুকরো টুকরো হয়ে যেতে সময় লাগবে না। দেশে অশান্তির জন্য ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ –কে দায়ী করেছেন তিনি। অনেকেই মনে করেছেন, এটা জুন্টা সরকারের শেষের শুরু হয়েছে।