ভারত জুড়ে বিক্ষোভ চলছেই। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন রাজ্যে। ১৪৪ ধারা, গুলি, লাঠিচার্জ করেও দমন করা যাচ্ছে না বিক্ষোভ। এমন অবস্থায় বিজেপি নেতৃত্ব নিয়মিতভাবে এই বিক্ষোভকে ‘মুসলিম অভ্যুত্থান’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে প্রতিবাদকে বিজেপি শুধুই মুসলিমদের বিক্ষোভ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। ফলে বেছে বেছে মুসলিম বিক্ষোভকারীদের তথা দিল্লিতে পুলিশ কঠোর দমন নীতি নিচ্ছে। প্রথমে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হয় পুলিশ। এছাড়া গতকাল পুরনো দিল্লির দরিয়াগঞ্জে শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠিচার্জ তারই নমুনা বলে বিরোধীদের দাবি। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মিছিল যখন দরিয়াগঞ্জের গলিতে, তখন পুলিশ পিছন থেকে হঠাৎ এসে লাঠিচার্জ করে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বার বার বলছেন, ‘কারা সহিংসতা করছে, তা পোশাক দেখেই চেনা যাচ্ছে।’ তার এই বক্তব্য বিশেষ সম্প্রদায়কে ইঙ্গিত করেছে বলে প্রশ্ন উঠেছে।
নতুন নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে যে ১১০১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন, তাদের অন্যতম হলেন স্বপন দাশগুপ্ত। তিনি টুইটারে যুক্তি দিয়েছেন, ‘ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে যে, এই অশান্তি রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়ার বিরুদ্ধে মুসলিমদের অভ্যুত্থান। নাগরিকত্বের বিষয়টি তাতে সুবিধা মতো যোগ করে নেওয়া হয়েছে।’
তবে সিপিএমের পলিট বুরো সদস্য নীলোৎপল বসু বলেন, ‘বিজেপি প্রথম থেকেই এই প্রতিবাদকে ধর্মীয় চেহারা দিতে চাইছে। যাতে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণে সুবিধা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সাধারণ মানুষ থেকে ছাত্রছাত্রী, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সংবিধানের পক্ষে রুখে দাঁড়িয়েছেন তারা।’
কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেছেন, ‘এনআরসি ও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন দেশের গরিব মানুষের বিরুদ্ধে। সংবিধানের মূল আত্মার বিরুদ্ধে। মানুষ এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে সংবিধানের পক্ষে লড়ছেন।’
এদিকে বিক্ষোভ একের পর এক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। বিহারেও তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সেখানে জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। জামিয়া ও ইন্ডিয়া গেটের সামনে প্রতিবাদ হয়েছে। তবে তা শান্তিপূর্ণ ছিল। পরে রাতেও প্রচুর ছাত্রছাত্রী বিক্ষোভ অংশ নেন।